অর্থ বছরের শেষপ্রান্তে বিশেষজ্ঞদের অভিমত
ফারুক আহমেদঃ আগামী ২রা জুন নতুন অর্থ বছরের বাজেট পাবে জাতি। সরকার ইতিমধ্যেই আগামী অর্থ বছরের আকার কেমন হবে তা’ জানিয়ে বলেছে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম হবে আগামী অর্থ বছরের বাজেট। এক্ষেত্রে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকার। বিদ্যমান বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে অর্থনীতিতে। নতুন বছরে সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অন্তর্বর্তী সরকারের পথরেখা কেমন হবে তা’ নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনেক।
নতুন অর্থবছরকে সামনে রেখে চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকের শেষে দেশের অর্থনীতির হালহকিত বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতির চক্র স্বাভাবিকভাবে এগুতে পারেনি। পুরো অর্থবছর জুড়েই অর্থনীতি চলেছে নেতিবাচক ধারায়। চলতি অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে অর্থনৈতিক মূল্যায়নে দেখা যায় দেশের অর্থনীতি এগিয়েছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, এতে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধিতে হয়নি। বিনিয়োগও কমেছে। এমনি অবস্থায় অর্থনীতিকে নেতিবাচক ধারা থেকে কাটিয়ে সম্ভাবনার জায়গায় নিতে আগামী বাজেটে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি অর্থনীতি পর্যবেক্ষক মহলের। তারা বলেছেন, অর্থনীতির প্রাণ হিসেবে স্বীকৃত বিনিয়োগ, আমদানী রফতানী, সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ ইত্যাদির জন্য বিনিয়োগ সহায়ক মসৃণ চারণক্ষেত্র প্রস্তুত করতে না পারলে অর্থনীতির অস্থিরতা কাটবে না।
অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, সবদেশেই টেকসই অর্থনীতির একটি চক্র থাকে, বাংলাদেশে সেটি স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। এটি শুধু চলতি অর্থ বছরেই দেখা যাচ্ছে তা’ নয়। বিগত বছরগুলিতেও লক্ষ্য করা গেছে, অর্থনীতির মৌলিক ক্ষেত্র যেমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির দীর্ঘকালের বিশৃঙ্খলা স্থায়ী ভিত্তির রূপ পেয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে বিনিয়োগে। আমদানী রফতানীতে। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ কমে গেছে। আমদানী-রফতানীতে ওভার ইনভয়েস- আন্ডার ইনভয়েস হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। ডিমান্ড সাইড সংকুচিত হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা কাটানো যাচ্ছে না। যার প্রভাব পড়ছে সামস্টিক অর্থনীতিতে। বর্তমান সরকার এ অবস্থার উত্তরণে নানা উদ্যোগ গ্রহণও করেছে।
সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির সংকট কাটতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর নেতিবাচক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) অবশ্য দাবি করেছে, ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশে এসেছে প্রায় ৭৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের নেট বিদেশি বিনিয়োগ। পাশাপাশি প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবিত বিদেশি বিনিয়োগ নিবন্ধিত হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এমসিসিআই) বলেছে, বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা ও দেশীয় চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, কৃষি ও শিল্প খাতসহ কিছু সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে সেই পুনরুদ্ধারের পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। তারা বলছে, এবছর বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এডিপি) বাস্তবায়ন গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন; (৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ), এনবিআরের রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ পিছিয়ে আছে। অর্থাৎ ব্যাংক খাত, রাজস্ব আদায়, উন্নয়ন ব্যয় ও বিনিয়োগ পিছিয়ে, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ, খাদ্য আমদানি বেড়েছে কয়েক গুণ।
অন্যদিকে আবার বিশ^ অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশের প্রধান ৩ উন্নয়ন সহযোগী বিশ^ ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের আগের পূর্বাভাস হ্রাস করেছে। বাংলাদেশও চলতি অর্থ বছরের প্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধি কমিয়ে এনেছে।
বিশ^ব্যাংক পূর্বাভাসে বলেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি হতে পারে ৩.৩ শতাংশ। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) তাদের পূর্বাভাসে বলেছে, একই অর্থ বছরের বাংলাদেশে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। অন্য দিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৩ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। বিশ^ ব্যাংক অবশ্য বলেছে, বৈশি^ক অর্থনীতির অনিশ্চয়তার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও প্রবৃদ্ধি কমেছে। এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এক হিসেবে বলেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে সাময়িক হিসেবে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এ সময়ে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৭৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪.৩৪ শতাংশ এবং সেবা খাতে ৪.৫ ১শতাংশ। তবে এ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমলেও মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলার হয়েছে। আগের অর্থ বছরে এটি ছিল ২৭৩৮ ডলার। অর্থাৎ মাথাপিছু আয় ৮০ ডলার বেড়েছে। গত মাসে প্রবৃদ্ধির কমার এই হিসেব দেয়া হলেও অর্থ বছরের আরও এক মাস বাকী রয়েছে। সুতরাং চ‚ড়ান্ত হিসেব হয়ত এর পরে পাওয়া যাবে।
বিশ^ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইএমএফ-এর এই ভিন্ন ভিন্ন পূর্বাভাস ইঙ্গিত দেয় বাংলাদেশের অর্থনীতি সুস্থির অবস্থানে নেই। কারণ এর আগে এই ৩ সংস্থাই জিডিপি প্রবৃদ্ধির বেশী হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল। এখন সকলেই তাদের আগের পূর্বাভাস থেকে সরে এসে প্রবৃদ্ধির হার কমিয়েছে। যেমন গত জানুয়ারীতে বিশ^ব্যাংক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ। আইএমএফ- এর পূর্বাভাস ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পূর্বাভাস ছিল ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
সূত্র বলছে, দেশের অর্থনীতি কোন দিকে যাচ্ছে তা’ মাপার জন্য যে কয়টি সূচক জনপ্রিয় তার মধ্যে জিডিপি বা ‘গ্রোস ডমোস্টিক প্রোডাকশন’ বা মোট দেশজ উৎপাদন অন্যতম। প্রতি বছরই এ জিডিপির প্রবৃদ্ধি বিবেচনায় নেয়া হয় অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য। একই সাথে অর্থনৈতিক পরিকল্পনায়ও জিডিপি মূখ্য সূচক হিসেবে কাজ করে। অর্থ বছরের প্রথমে সাধারণত সরকারের পক্ষ থেকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একটি টার্গেট নির্ধারণ করা হয়। বৈশি^ক অর্থনীতি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও যারা বিভিন্ন দেশে ঋণ বা অনুদান বা উন্নয়ন সহায়তা করে তারাও অর্থনীতির নানা অনুসঙ্গ, বাস্তবতা, সরকারের নীতি, রাজনৈতিক হালচাল, আর্থ- সামাজিক অবস্থা, ব্যাংকিং খাতের সক্ষমতা, সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ, অভ্যন্তরীণ বাজার ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে জিডিপি প্রবৃদ্ধির একটি পূর্বাভাস দেয়। রেওয়াজ অনুযায়ী চলতি অর্থ বছরেও বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বিষয়ে বিশ^ ব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরে জন্য পৃথক প্রবৃদ্ধি অর্জনের পৃথক পূর্বাভাস দিয়েছিল। পরবর্তীতে অর্থ বছরের বিভিন্ন প্রান্তিকে সেই পূর্বাভাস অর্থনীতির বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে আবার সংশোধনও করেছে। যেমন এপ্রিলের শেষের দিকে বিশ^ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও আইএমএফ পূর্বের পূর্বাভাস হ্রাস করে নতুন পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পূর্বাভাস আবার অভিন্ন নয়। ৩ সংস্থার ৩ রকমের। এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ মহল বলছে চলতি অর্থ বছর জুড়েই অর্থনীতি নানা সংকটে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ছিল না বলেই এমনি অবস্থা হয়েছে। বিশ^ ব্যাংকের মতে, মূলত রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দীর্ঘস্থায়ী আর্থিক সংকটের কারণেই প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সামাজিক অস্থিরতাসহ বাণিজ্যে বিঘœ, দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা এ ক্ষেত্রে ভ‚মিকা রেখেছে বলে জানিয়েছে। সংস্থাটি তাদের সর্বশেষ দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদনে ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস্ -এই তথ্য জানিয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, এখন অর্থ বছরের শেষ প্রান্তে এসেও অর্থনীতির চাকার ঝাঁকুনি কমেনি। অর্থনীতিতে স্থিতিবস্থা আসেনি। এমনি অবস্থায় এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হার কোথায় যেয়ে স্থির হয়। তাদের মতে, নতুন অর্থবছরে অর্থনীতির অনুঘটকগুলি ঠিকঠাকমত নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এটি চ্যালেঞ্জ হলেও তা’ অসম্ভব নয়। শক্ত হাতে অর্থনীতির পরিকাঠামো পরিচালনা করতে হবে। তা’ না হলে অর্থনীতি ঝুঁকিতেই থাকবে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি পদক্ষেরপেই সুশাসন জরুরী।
বাংলাদেশের অর্থনীতির হালচাল বা গতি-প্রকৃতি অথবা সম্ভাবনা বা ঝুঁকি ইত্যাদি পর্যবেক্ষণে আপনার অভিমত কী- এমন এক প্রশ্নের উত্তরে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও কলাম লেখক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, অর্থনীতি হলো উৎপাদন, বন্টন এবং বাণিজ্যের পাশাপাশি পণ্য এবং পরিসেবার খরচের একটি ক্ষেত্র। এটি একটি সামাজিক ডোমেনও বটে। তাই অর্থনীতির প্রভাব বা ভাল মন্দ সমাজের সকল ক্ষেত্রে অনুভূত হয়। অর্থনীতি সম্পদের উৎপাদন, ব্যবহার এবং পরিচালনার সাথে যুক্ত। প্রথাসিদ্ধ অর্থনীতির এই ঘেরাটোপে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে যা বিশ^ ব্যাংক. এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইএমএফ এর ভবিষ্যত বাণীতেও লক্ষ্যনীয়। অর্থনীতিকে টেকসই করতে সরকার অবশ্য একটির পর একটি উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে এখানে সরকারের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পদক্ষেপ জরুরী। নতুন অর্থ বছরে অর্থনীতির চাকা বেগবান করতে কেমন বাজেট প্রত্যাশিত- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসন্ন বাজেটে রাজস্ব আদায় ও এডিপি বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনার পথরেখা থাকতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি টেকসই অবস্থানে আনতে কোন ধরণের উদ্যোগ প্রয়োজন- এমনি এক প্রশ্নের উত্তরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. শেখ সারাফাত হোসেন বলেন, মোটা দাগে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনতে সরকারকে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা পঞ্চবার্যিক পরিকল্পনা ইত্যাদির সাথে এলাইমেন্ট করে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করতে হবে। কোন একটি সিঙ্গেল বছরের বাজেটে এটি সম্ভব নয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে তিনি গতিশীল অর্থনীতির পূর্বশর্ত বর্ণনা করে বলেন, দেশী বিদেশী বিনিয়োগের জন্য রাজনৈতিক সহাবস্থানের বিকল্প নেই। রাজস্ব নীতিসহ ব্যবস্থাপনায় দূরদর্শী হতে হবে। কারণ অর্থনীতির মূল জায়গা রাজস্ব আয়। তাই প্রান্তিক ও সাধারণ জনগোষ্ঠীকে করের চাপে না ফেলে প্রত্যক্ষ কর- এ জোর দেয়া যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স প্রবাহকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা তিনি আসন্ন বাজেটে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি, কৃষি খাতে ভতুর্কি, এসএমইসহ প্রাইভেট সেক্টর, বিদ্যুত ও জ্বালানী নিরাপত্তায় গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানান। একই সাথে এডিপিসহ বাজেটের সার্বিক খাতে অপচয় কমানোর কৌশল নিরূপণসহ চূড়ান্তভাবে আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব আরোপ করেন।
খুলনা কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতির তরুন শিক্ষক হুমাইয়া ইয়াসমিন বলেন, বাজেটে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি অর্থনীতির প্রাণ হলেও জিডিপিতে এর অবদান দিন দিন কমছে। দেড় দশক আগে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ১৮ শতাংশ এখন কমে তা’ হয়েছে ১১ শতাংশ। এতে কৃষির সম্ভাবনাময় দিকগুলো থেকে জাতি বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের আমদানীনির্ভর অর্থনীতি থেকে বের হতে কৃষিকে আরও বেশী প্রযুক্তিনির্ভর এবং ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কৃষি গবেষণায় বেশী বরাদ্দ রাখতে হবে। কৃষিভিত্তিক দক্ষ প্রফেশনাল তৈরীতে বাজেট বাড়াতে হবে। এতে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং আমদানী নির্ভরতা কমবে।