উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন
এম. পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জঃ বাগেরহাটে মোরেলগঞ্জে একটি ইউনিয়নে দুঃস্থ মহিলা সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিডি)’র আওতায় জনপ্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল কার্ডধারীদের চাল কম দেওয়া খরচের নামে টাকা উত্তোলনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা অশোক কুমার গোলদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন সুবিধাভোগীরা। বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে ৫ ঘন্টা কক্ষে অবরুদ্ধ ইউপি সচিব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন।
জানাগেছে, মঙ্গলবার সকালে হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ভিজিডির আওতায় ২৩৪ জন সুবিধাভোগীর ১১শ’ ৭০ বস্তা চাল জানুয়ারী থেকে মে ৫ মাসের ১৫০ কেজি জনপ্রতি ৫ বস্তা চাল বরাদ্দ হলে তা বিতরণকালে কার্ডধারীরা প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি চালের পরবর্তীতে ২২ কেজি, ২৪ কেজি ও ২৫ কেজি ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত প্রতি বস্তায় কম চাল নিতে হয় কার্ডধারীদের। প্রতিবাদে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন পরিষদ চত্বরে। খাদ্যগুদাম থেকে ইউপি সচিব বরাদ্দকৃত এ চাল উত্তোলন করে আগেরদিন সোমবার ৪টি ওয়ার্ডে ৪শ’ ৬৮ বস্তা চাল সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছেন। তাদের ১৫০ কেজি না দিয়ে ১২০ কেজি দেওয়া হয়েছে ইউপি সচিব বস্তা থেকে চাল সরিয়ে ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের পদে দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা উপজেলা যুবউন্নয়ন অফিসার মো. একেএম ইখতিয়ার উদ্দিন, সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার দিপিকা তরফদারের অনুপস্থিতিতেই এ চাল বিতরণ করেছেন ইউপি সচিব।
এ ছাড়াও ইউপি সচিব অশোক কুমার গোলদার গ্রামপুলিশ দিয়ে আদায় করে প্রতিটি কার্ডধারীর নিকট থেকে ২শ’ টাকা খরচ বাবদ। এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে সুবিধাভোগীরা সচিবের বিরুদ্ধে পরিষদ কার্যালয়ে বিক্ষোভ করে ৫ ঘন্টা তাকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হালিম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিনসহ স্থানীয় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে তারা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা মোতাবেক সুবিধাভোগীরা তাদের প্রাপ্ত চাল বুঝে পাবেন ঈদের আগেই। তারা আশ্বাস্ত করে কার্ডধারীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
কথা হয় কার্ডধারী রওশন আরা বেগম, মনোয়ারা বেগম, মর্জিনা বেগম, রাশিদা বেগম, নাসিমা বেগম, সিলা বেগমের নামের চাল নিতে আসা শশুর বৃদ্ধ মো. হাফেজ আলী মোল্লা ক্ষোভের সাথে বলেন, দুই দিন ধরে পরিষদে ঘুরছি কার্ডনিয়ে। সকাল ৯টা থেকে বসে আছি। হঠাৎ করে চাল দেওয়া বন্ধ। ৩ বস্তা চাল আমাদের সামনে মাপা হয়েছে। কোন বস্তায় ৮ কেজি, ৬ কেজি ৫ কেজি কম রয়েছে। সচিব গোডাউনে চাল রেখে এসেছেন। তার ইচ্ছামাফিক আমাদের চাল নিতে হবে। আমাদের ৫ মাসের ১৫০ কেজি চাল বুঝে পেতে চাই।
হোগলাবুনিয়াইউপি সচিব অশোক কুমার গোলদার বলেন, ভিজিডির ১১ শ’ ৭০ বস্তা চালের মধ্যে গতকাল ৪৬৮ বস্তা চাল বিতরণ করা হয়েছে ৪টি ওয়ার্ডে। আজ বিতরণকালে ৩ বস্তা চাল পরিমাপ করে কম থাকায় আপাতত চাল দেওয়া বন্ধ। খাদ্যগুদাম থেকে বস্তাগুনে চাল আনা হয়েছে। ২শ’ টাকা খরচের বিষয়ে ১শ’ টাকা চৌকিদারী ট্যাক্স বাকি ১শ’ টাকা পরিবহন খরচ।
এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সুবিধাভোগীরা তাদের প্রাপ্ত চাল সঠিক নিয়মে ঈদের আগেই বুঝে পাবেন।