/ রামপাল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মান কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা

রামপাল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নির্মান কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা

নির্মান কাজ শেষ না হওয়ার আগেই জনবল নিয়োগ

বাগেরহাটের রামপালে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজ শেষ না হওয়ার আগেই জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা এক বছর ধরে বসেই বেতন- ভাতা নিচ্ছেন। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নয় বছরে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে ৬০ ভাগ কাজ শেষ করে এক বছর ধরে লাপাত্তা রয়েছে।

বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি সুত্র জানায় বিগত আওয়ামীলীগ সরকার দেশের ১০০ টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মানের উদ্যেগ হাতে নেয়। এরই অংশ হিসাবে উপকুলীয় এ উপজেলায় বিগত ২০১৭ সালে মেসার্স ঢালী কন্সট্রাকশন নামের একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান একটি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মানের কার্যাদেশ পায়। ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজের উদ্বোধন করা হয়। নির্মানাধীন ওই প্রতিষ্ঠানটির নির্মান ব্যয় ধরা হয় ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৬২৮ টাকা। দরপত্রের শর্র্তানুয়ায়ী ৫৪০ দিনের মধ্যে নির্মান কাজ শেষ করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকে ধীর গতিতে কাজ করায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে গত নয় বছরে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৪০ ভাগ কাজ শেষ না করেই গত বছরের জুলাই মাস থেকে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি লাপাত্তা রয়েছে। এরফলে দীর্ঘ এক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর গত বছর ওই প্রতিষ্ঠানে একজন অধ্যক্ষসহ মোট ১৩ জন জনবল নিয়োগ করে। ওই ১৩ জনের মধ্যে সাতজন শিক্ষক ও ছয়জন কর্মচারী। তারা গত এক বছর ধরে বসেই সরকারি বেতন- ভাতা উত্তোলন করছে। জনবল নিয়োগের সাথে গত দুই শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামুল্যের পাঠ্যপুস্তকও সরবরাহ করা হয়। সেই পাঠ্যপুস্তক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে রেখে দিয়েছেন।

এ বিষয় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ইন্সট্রাক্টর কাজি মনিরুজ্জামান বলেন ভবনের নির্মান কাজ শেষ না হওয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাচ্ছেনা। নিয়োগ পাওয়া জনবলও কোনো কাজে আসছেনা। এটা ভেবে আমাদের খারাপ লাগছে। এবিষয় দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাফিজ আক্তার জানান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বার বার সময় নিয়ে গত ৮/৯ বছরে ৬৫-৭০ ভাগ কাজ শেষ করেছে। এখন কাজ শেষ না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যে কার্যাদেশ ছিল তা বাতিল করে বাকি কাজের জন্য নুতন করে কার্যাদেশ দেয়া হবে। আশা করি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু হবে।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোয়েব আহম্মেদ খান গত ১৪ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে আসেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন দীর্ঘ ৮/৯ বছরে কাজ শেষ করতে না পারাটা দুঃখজনক। এখন ভবনের যে অবস্থা ক্লাশ নেয়া দুরের কথা এখানে গরু- ছাগলেরও বসবাসের অনুপযোগী। এখানে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদেরকে অণ্য প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করা হবে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ঢালী কন্সট্রাকশনের পক্ষে এ প্রতিষ্ঠানের নির্মান কাজ দেখাশুনা করেন হুসাইন আলী নামের এক ব্যক্তি। তার কাছে এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।