রূপান্তর আয়োজিত আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তারা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ বেসরকারি সংস্থা রূপান্তর আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিষয়ক আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় বক্তারা বলেছেন, শুধু আর্থিক সহায়তাই সামাজিক নিরাপত্তা দিতে পারেনা। এজন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা। একইসাথে বক্তারা সকল প্রকার দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করার মধ্যদিয়ে সমাজের পরিবর্তন আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বক্তারা আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নে দারিদ্রতা কমাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত। এজন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সকলকে আরও আন্তরিকতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে।
বুধবার সকালে নগরীর হোটেল ক্যাসল সালামে রূপান্তরের স্ক্রিম প্রকল্পের আওতায় এ পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রূপান্তর-এর নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ’র সভাপতিতে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলার স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ-পরিচালক মো: ইউসুপ আলী।
এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন স্ক্রিম প্রকল্পের পরিচালক, রূপান্তরের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, সাংবাদিক ফারুক আহমেদ। মূল বক্তব্য এবং আলোচনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন বিশ্লেষক আনোয়ারুল কাদির।
এসময় সম্মানিত অতিথি ছিলেন খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খান মোতাহার হোসেন, কৃষি প্রকৌশলী দীপংকর চন্দ্র বালা, জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আঃ করিম, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা অসীম কুমার শিকদার, বিআরডিবি’র উপ-প্রকল্প পরিচালক আফরুজ্জামান, মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই গাইন, বাগেরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর, লাউডোব ইউপি চেয়ারম্যান শেখ যুবরাজ, বাগেরহাটের ষাটগুম্বজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাংবাদিক শেখ আবু হাসান, গাজী মনিরুজ্জামান, নূর আলম, নাগরিক ফোরাম খুলনা মহানগরের মহাসচিব এ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার পিয়া প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপ-পরিচালক মোঃ ইউসুপ আলী বলেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিকে আরো বেশী মানুষের কাছে পৌঁছাতে এবং ওভারল্যাপিং বন্ধ করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অন্তভুর্ক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সবার আগে বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে হবে। প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রার সমন্বয় থাকতে হবে। খুলনা জেলার সরকারি সুবিধাভোগী সব মানুষের তালিকা এখন জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য জেলায় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে এই কাজ করা সম্ভব হলে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে ওভারল্যাপিং থাকবে না। এর ফলে এর সুফল আরও কার্যকরভাবে সেবা গ্রহীতাদের কাছে পৌছানো যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রূপান্তর-এর কর্মসূচী সমন্বয়কারী অসীম আনন্দ দাসের সঞ্চালনায় এ পরামর্শ সভায় জানানো হয়, জাতীয় বাজেটের মাধ্যমে অর্থায়ন করা সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার অধীনে প্রায় ১৪৫টি কর্মসূচি রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক হিসাব মতে এই কর্মসূচিগুলি ২৩টির মতো লাইনের মন্ত্রণালয়, বিভাগ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগের মধ্যে সমন্বয় বা তথ্য আদান-প্রদানের কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেই। এর ফলে মাঠ পর্যায়ে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে নানান অসঙ্গতির সৃষ্টি হয়। এ অবস্থা দূর করতে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা জরুরী বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।