খুলনার যোগিপোল গ্রামের শেখ সাইফুল ইসলাম (৩৮) পরিবারে ভরসার নাম ছিলেন। কিডনির অসুস্থতায় ভুগলেও স্বজনরা আশায় ছিলেন—চিকিৎসা পেলে তিনি আবার ঘরে ফিরবেন। কিন্তু খুমেক হাসপাতালের এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তাদের সেই আশা চূর্ণ হলো।
শনিবার সকালে মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি হন সাইফুল। সন্ধ্যা নামতেই শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। স্বজনরা অক্সিজেনের জন্য ওয়ার্ডে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। অনেক কষ্টে রাত ১টার দিকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল পরিবারে।
কিন্তু রবিবার সকালে ঘটে মর্মান্তিক দৃশ্য। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়ার্ডের আউটসোর্সিং কর্মচারী আব্দুল জব্বার এসে হঠাৎ করেই সাইফুলের নাক থেকে অক্সিজেনের নল খুলে নেন এবং সিলিন্ডার নিয়ে যান অন্য রোগীর জন্য। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছটফট করতে করতে সাইফুলের নিস্তব্ধ দেহ পড়ে থাকে শয্যায়।
হাসপাতালের করিডরে ভেঙে পড়া সাইফুলের মা রশিদা বেগম বিলাপ করে বলেন, রাতভর ছেলেকে বাঁচাতে অক্সিজেনের জন্য দৌড়েছি। সকালবেলা ক্লিনার মাস্ক খুলে নেওয়ার পরই আমার সন্তান চলে গেল। আমার ছেলেকে কে ফিরিয়ে দেবে?
বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ডাক্তারের অনুমতি ছাড়াই অক্সিজেন খুলে নেওয়া হয়েছে। আধাঘণ্টার মধ্যেই ভাইটা মারা গেল। এখানে টাকা ছাড়া কোনো সেবা মেলে না।
খুমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট নেই। অক্সিজেন দেওয়া বা খুলে নেওয়া ক্লিনারের দায়িত্ব নয়। এটি ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নেবেন। অনুমতি ছাড়া খুলে থাকলে এটি অপরাধ। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।