খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিট

উদ্ভুত পরিস্থিতি
নিয়ে আজ বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার ঃ ঈদ-উল-আযহার আগের রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেন নিয়ে ঘটে গেলো তুলকালাম কান্ড। মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের এ ঘটনায় খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের উত্তেজিত স্বেচ্ছাসেবকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের আরএমও ও করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার ওই সময় আত্মগোপন করেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা: শেখ মো: ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে বৈঠক হবে বলে অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা: ফরিদ উদ্দিন জানান।
খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারী, রোগীর স্বজন, খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবক এবং উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদের আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেল থেকেই অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায় নিচতলার রেড ও ইয়োলো জোনে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয় অক্সিজেনের সংকট। কিন্তু পরে জানা গেলো সদ্য স্থাপিত স্পেক্ট্রা অক্সিজেন কোম্পানীর ট্যাংক দিয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রোগীদের বেড পর্যন্ত অক্সিজেন যাওয়ার রাস্তায় ময়লা জমার ফলে প্রেসার কমে গিয়েছে। স্পেক্ট্রা কোম্পানীর জন্য অপেক্ষা না করেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব প্রকৌশলী দিয়ে ময়লা পরিষ্কার করে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক করতে গিয়ে কয়েক ঘন্টা দেরি হয়। আর এসময় রোগীদের সাপোর্ট দেয়ার জন্য খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের দপ্তরে মজুদ থাকা সিলিন্ডার এনে রোগীদের সেবা দেন। এসময় খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন এনেসথেসিয়া বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা: শেখ মো: ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং হাসপাতালের দুই আরএমও যথাক্রমেে ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার ও ডা: অঞ্জন চক্রবর্তী। কিন্তু কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই অক্সিজেন ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবকদের করোনা ওয়ার্ডে ঢুকতে বাধা দেন আরএমও ডা: সুহাস। এসময় তাদের এক স্বেচ্ছাসেবকের গায়ে হাত দেয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা। এরপর অক্সিজেন ব্যাংকের সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে উপস্থিত ডা: শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তাদের নিয়ন্ত্রণ করেন। যদিও উত্তেজনা দেখে হাসপাতালের ভেতরের পথ দিয়ে ডা: সুহাস আত্মগোপনে গিয়ে রক্ষা পান বলেও অনেকে উল্লেখ করেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় রাত দেড়টার দিকে সেন্ট্রাল লাইনের অক্সিজেন স্বাভাবিক হয়। ডা: ফরিদ সেখানে উপস্থিত থাকলেও সার্বিক বিষয় তদারকি করেন পরিচালক ডা: মো: রবিউল হাসান ও করোনা চিকিৎসা বিষয়ক কমিটির সার্বিক সমন্বয়কারী ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ।
হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: রবিউল হাসান বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে হয়তো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে রোগীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও বড় কিছু ঘটেনি।
অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক ডা: শেখ মো: ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার সকালে হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সেদিনের ঘটনার একটি সন্তোষজনক সমাধান হবে।
তবে আরএমও ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, বৈঠকের কোন বিষয় তার জানা নেই। কেননা, বৈঠক হতে পারে তাদের সাথে যারা পক্ষ। কিন্তু খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকতো হাসপাতালের কোন পক্ষ না, তাদের সাথে আবার কিসের বৈঠক ?
খুলনা অক্সিজেন ব্যাংকের মূল উদ্যোক্তা সালেহ উদ্দিন সবুজ বলেন, তাদের একটাই দাবি আরএমও ডা: সুহাস রঞ্জন হালদারের পদত্যাগ। ওই দাবিতে তারা এখনও অটল আছেন। বিষয়টি নিয়ে আজ পরিচালকের আহবানে তাদের সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে। আশা করা হচ্ছে তাদের দাবি বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে পরিস্থিতি শান্ত হবে।