মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের কয়েকদিন আগে সহায়তা হিসেবে ব্যয়ের কোনো শর্ত ৩৫ কোটি ডলার পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। করোনা সহায়তা প্রকল্পের অংশ হিসেবে দেশটিকে এই অর্থ প্রদান করে সংস্থাটি। তবে অর্থ সরবরাহের এক সপ্তাহ পরেই দেশটিতে ঘটলো সেনা অভ্যুত্থান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অর্থ বিশেষজ্ঞরা জানান, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে জরুরি ত্রাণ তৎপরতা হিসেবে এ টাকা ব্যবহার হবে এমনটাই ছিল উদ্দেশ্য। ১৩ জানুয়ারি আইএমএফ বোর্ড এ অর্থ বরাদ্দে অনুমোদন দিয়েছিল। তাই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে প্রদত্ত অর্থ ফিরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আইএমএফের এক মুখপাত্র বলেন, ঘটনাক্রমের ওপর আমরা নজর রাখছি। অর্থনীতি ও জনগণের ওপর এর কি প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেছেন, গত সপ্তাহে এই টাকা মিয়ানমারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের এই সেনা অভ্যুত্থানকে আন্তর্জাতিক সংকট হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষকেরা। ইতিমধ্যে জেনারেলদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মিয়ানমারকে সহায়তা করার ব্যাপারটা পর্যালোচনা করা হবে।

আইএমএফের সাবেক অর্থনীতিবিদ স্টেফানি সেগাল বলেন, এই টাকার তেমন শর্তও নেই। ‘আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসিত কর্মসূচির জন্য এই টাকা দেওয়া হয়নি। আর একবার টাকা দেওয়ার পর আইএমএফ আবার টাকা ফিরিয়ে নিয়েছে, এমন আমার জানা নেই।’

এদিকে গত সোমবার সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বাচিত বেসামরিক নেতা অং সান সু চির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছে মিয়ানমার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুচিকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। আমদানি ও রফতানি আইন লঙ্ঘন ও যোগাযোগে অবৈধ ডিভাইস ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে মিয়ানমার পুলিশ।
গত বছরের ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বড় জয় পায়। সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউএসডিপি ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। দাবি মানা না হলে সেনাবাহিনী ফের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় তারা।