স্টাফ রিপোর্টার ঃ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ আজ। দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচির আলোকে খুলনা জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ঃ খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়ূ,বর্তমানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় পুষ্পমাল্য অপর্ণের ক্ষেত্রে প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে একসাথে দুই জনের বেশি শহিদ মিনারে গমন করতে পারবেন না। শহিদ মিনারের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। মাস্ক পরিধান ব্যতিরেকে কেউ শহিদ মিনার চত্ত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না।
২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে (০০.০১টায়) শহিদ হাদিস পার্কে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ,বীর মুক্তিযোদ্ধা,অন্যান্য দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনার মাধ্যমে শহিদ দিবসের কর্মসূচির শুভ সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,সরকারি,আধা-সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান,সকল বেসরকারি ভবনে সঠিক নিয়মে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং সূর্যাস্তের সাথে সাথে পতাকা নামানো হবে। জাতীয় পতাকা নির্ধারিত মাপ ও রং এবং মানসম্পন্ন হতে হবে। পতাকা অর্ধনমিত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফ্লাগ রুলস অনুসরণ করতে হবে।
সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নগরভবন চত্ত্বরে সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে বাদ জোহর বা সুবিধামত সময়ে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাদ জোহর খুলনা কালেক্টরেট জামে মসজিদসহ সকল মসজিদে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। সুবিধামত সময়ে মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপসনালয়ে অনুরূপ বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।
বিকেল চারটায় অমর শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বয়রাস্থ বিভাগীয় গণ-গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

শহিদ হাদিস পার্ক এবং খুলনা জাতিসংঘ শিশু পার্কে সন্ধ্যায় খুলনা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও একুশের পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে স্থানীয় পত্রিকাগুলো বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে বাংলা বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয়েছে।

২১ ফেব্রুয়ারি আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে স্কুল-কলেজে স্ব-রচিত ছড়া, কবিতা, রচনা প্রতিযোগিতা এবং কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি সংক্রান্ত চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় জাদুঘরে শিশু-কিশোর, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনা টিকিটে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করবে।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন ঃ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্য্যদেয়ের সাথে সাথে নগর ভবন, মেয়রের বাস ভবন, খালিশপুর শাখা অফিস, পাবলিক হল, নগর স্বাস্থ্য ভবন, মাতৃসদন, পৌর গ্যারেজ, এ্যাসফল্ট প্লান্ট, ওয়ার্ড অফিসসহ কমিউনিটি সেন্টার ও কেসিসি পরিচালিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা এবং শহীদ হাদিস পার্কসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়সমূহে বাংলা বর্ণমালা ও ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া সকাল ৯টায় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক কর্তৃক নগর ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করাসহ সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্লে থেকে নার্সারী ‘ক’ বিভাগ, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি ‘খ’ বিভাগ এবং তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ‘গ’ বিভাগে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। সিটি মেয়র প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করবেন।
আওয়ামীলীগ ঃ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে সকাল ৭টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করন,কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান। এর পরেই দলীয় কার্যালয় হতে প্রভাত ফেরি অনুষ্ঠিত হবে। প্রভাত ফেরি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ সকাল সাড়ে ৬ টায় কালোব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সকাল ১০টায় ওয়েবিনারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে ওয়েবিনারে যুক্ত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। এছাড়া আলোচক হিসেবে থাকবেন ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। আলোচনা সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে । এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল, মন্দিরে প্রার্থনা এবং সন্ধ্যা ৬-৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ঃ এ উপলক্ষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পতাকা উত্তোলন (জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন), সকাল সাড়ে ১০ টায় স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আলোচনা সভা, আসর বাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শহীদদের রুহের মাগফেরাত,দেশের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া মাহফিল। উক্ত সকল কর্মসূচি সরকারের জারীকৃত স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশিকা অনুসরণ করে অনুষ্ঠিত হবে।
মহানগর যুবলীগ ঃ মহানগর যুবলীগের কর্মসুচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৭টায় মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাত ফেরীতে অংশ গ্রহন।
কর্মসুচিতে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে স্বাস্থ্যবিধী মেনে দলের সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের অংশ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন খুলনা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন।