এ এইচ হিমালয় : আঠারোবেঁকি নদীর ভাঙনে ঝুঁকিতে পড়েছে খুলনার রূপসায় উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরসমূহ। গত ২৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৯টি ঘর দুঃস্থ ও ভূমিহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখনও সবাই ঘরে ওঠেননি। এরই মধ্যে নদী ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন উপকারভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, নদী খননের পর থেকে প্রতিবছর অল্প অল্প করে পাড় ভাঙছে। চলতি বর্ষায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ বছরই নদী তীরের প্রায় ১০/১২ ফুট জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে আগামী বর্ষায় ঘরগুলোও বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন তারা।
রূপসা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফ হোসেন জানান, প্রথম পর্যায়ে আঠারোবেঁকি নদী পাড়ের নেহালপুর খানকার ঘাট এলাকায় খাস জমিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ২৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছর দ্বিতীয় পর্যায়ের আরও ৩৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঘরের সীমানাতেই ভাঙন বেশি। তিনি বলেন, ঘর নির্মাণের সময় নদী ভাঙন ছিলো না। চলতি বর্ষা মৌসুমে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন নদী পাড় ঘুরে দেখা গেছে, রূপসার নৈহাটি ইউনিয়নের নেহালপুর খানকার ঘাট এলাকায় নদীর ৩০/৪০ ফুট দূরেই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সারি সারি ঘর। এর মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের ঘরগুলো যেখানে শেষ হয়েছে, ওই এলাকায় ভাঙন বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৫ নম্বর ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন মোল্লা। পূর্বাঞ্চলকে তিনি বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে পাড়ের ১০/১২ ফুট ভেঙেছে। সামনের বছর ঘরের সামনের রাস্তা পর্যন্ত নদীতে চলে যাবে। এখনই যদি ভাঙন ঠেকানো না যায়, প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া এসব ঘর থাকবে না। আমরা আবার পথে বসে যাবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ঘর পেয়ে সবাই খুশি হচ্ছে। কিন্তু নদী ভাঙনে সেই আনন্দ ম্লান হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ২/৩ বছরের মধ্যে একটি ঘরও থাকবে না।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাসনিম বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আশ্রয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং জেলা প্রশাসককেও চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা না নিলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা জিও ব্যাগ ফেলাসহ ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেব।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালে আঠারোবেঁকি নদী খনন প্রকল্প শুরু হয়। গত ৩০ জুন এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। প্রায় ১৪৩ কোটি টাকা দিয়ে খনন করা হয়েছে ৪৯ কিলোমিটার নদী। এতে প্রাণ ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন বেড়েছে নদীর কয়েকটি এলাকায়।
পাউবো খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধ জিও ব্যাগ ফেলাসহ প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু হবে।