এ যেন অধরা স্বপ্ন জয় ব্ল্যাক ক্যাপসদের। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল এবং এখন ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনাল। শেষ তিন বিশ্বকাপের তিনটি নকআউট ম্যাচ। আগের দুই দেখায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেতে ব্যর্থ ছিল নিউজিল্যান্ড। তবে এবার ড্যারিল মিচেলের ৪৮ বলে ৭৩ রানের ইনিংস বদলে দিয়েছে পূর্বের সব ইতিহাস।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের প্রথম সেমিফাইনালে বুধবার (১০ নভেম্বর) ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল এবং জিমি নিশামের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ১ ওভার হাতে রেখে ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ১৬৬ রানের বাধা অতিক্রম করে যায় কিউইরা।

আবুধাবীর শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে ইংলিশদের ব্যাট করতে পাঠান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামস। ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান করে ইংল্যান্ড। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে নিউজিল্যান্ড শুরুটা ভালো না হলেও শেষ হাসিটা হেসেছেন তারাই। অথচ এই বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে গ্রুপ ওয়ানে দাপটের সঙ্গে খেলেই সেমিফাইনালে উঠেছিল ইয়ান মরগান বাহিনী। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলটি পাঁচ ম্যাচের মধ্যে ৪ ম্যাচেই জিতেছিল। অন্যদিকে গ্রুপ টু থেকে রানার্সআপ হয়ে ওঠা নিউজিল্যান্ড চমকই দেখাল।

১৬৬ রান লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরতেই হোচট খায় কিউই ব্যাটাররা। দলীয় ১৩ রানেই কেইন উইলিয়ামস ও মার্টিন গাপটিলের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে দল। এরপর ডেভন কনওয়েকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে রান রেটে কিছুটা পিছিয়ে যান ড্যারিল মিচেল। ৩৮ বলে ৪৬ রান করে কনওয়ে আউট হওয়ার পরপরই সাজঘরে ফিরে যান গ্লেন ফিলিপস। তবে ছয় নম্বরে নেমে খেলা জমিয়ে তোলেন জিমি নিশাম। ক্রিস জর্ডানের করা ১৭তম ওভারে নিউজিল্যান্ড নেয় ২৩ রান। ১০ বলে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ২৬ রান করে তিনি বিদায় নিলেও ম্যাচ বের করে আনেন মিচেল। ৪৮ বলে কড়া মিচেলের ৭৩ রানের ইনিংস নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে তোলে ৬ বল ও ৫ উইকেট বাকি থাকতেই। মিচেলের ইনিংসে ছিল চারটি করে চার ও ছক্কা।ইংল্যান্ডের পক্ষে লিয়াম লিভিংস্টোন ও ক্রিস ওকস দুটি করে উইকেট শিকার করেন।

এর আগে টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা অবশ্য ধীর গতির করেছিল ইংল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে ৫.১ ওভারে ৩৭ রান তোলেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও জস বাটলার। পরে নিউজিল্যান্ডকে নিজের প্রথম বলেই ব্রেকথ্রু এনে দেন অ্যাডাম মিলনে। বেয়ারস্টো শট মারতে গেলে কাভারে থাকা কেন উইলিয়ামস দারুণ এক ক্যাচে তাকে ফেরান। নামের পাশে ১৭ বলে মাত্র ১৩ রান যোগ করেন এই ডানহাতি। বাটলারও নিজের ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। হাত খুলে মারতে গিয়েই তিনি কিউই স্পিনার ইশ সোধির শিকার হন। ২৪ বলে ২৯ রান করে এলবির শিকার হন।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলীয় ইনিংস বড় করার চেষ্টা করেন ডেভিড মালান ও মঈন আলী। এই জুটিতে ৪৩ বলে ৬৩ রান আসে। অবশেষে মালান টিম সাউদির বলে উইকেটরক্ষক ডেভন কনওয়ের কাছে ক্যাচ দেন। এই বাঁহাতি ব্যাটার ৩০ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ রান করেন।

মালান বিদায় নিলেও উইকেটে অবিচল থাকেন মঈন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ফের তিনি নতুন ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে ২৪ বলে ৪০ রান যোগ করেন। লিভিংস্টোন ১০ বলে ১৭ করে জেমস নিশামের শিকার হন। তবে অপরাজিত দারুণ এক হাফসেঞ্চুরি করে মাঠ ছাড়েন মঈন। বাঁহাতি এই ব্যাটার ৩৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫১ রান করেন। অপরপ্রান্তে অধিনায়ক ইয়ান মরগান ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

নিউজিল্যান্ড বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট নেন সাউদি, মিলনে, সোধি ও নিশাম।