স্টাফ রিপোর্টারঃ ইলিশ মৌসুম শুরুর পর এই প্রথম খুলনার বাজারে ফিরেছে কিছুটা স্বস্তির আভাস। সপ্তাহের ব্যবধানে আকারভেদে কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে দাম। তবুও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের জন্য তা এখনও পুরোপুরি নাগালের মধ্যে আসেনি।
গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে খুলনার রূপসা পাইকারি মাছ বাজার, নতুন বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার ও শেখপাড়া বাজার,নিউমার্কেট, খালিশপুরের চিত্রালী,দৌলতপুর ও ফুলবাড়িগেট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশের দাম কমার খবরে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়।
গত সপ্তাহে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ঝাটকা ইলিশ এখন ৬০০ টাকা। আধা কেজি আকারের ইলিশ ১,৬০০ টাকা থেকে কমে ১,০০০ টাকা। ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১,৮০০ টাকা থেকে নেমে ১,৩০০-১,৪০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ ২,৭০০ টাকা থেকে নেমে ২,০০০-২,২০০ টাকা।বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম কমেছে এবং আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২৩ সালের একই সময়ে এক কেজি আকারের ইলিশ ছিল ১,৭০০ থেকে ১,৯০০ টাকা। ২০২২ সালে আগস্টের মাঝামাঝি দামে ছিল ১,৪০০থকে ১,৬০০ টাকা। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে খুলনার বাজারে ইলিশের দাম ছিল ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১,৭০০ থেকে ২,২০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১,৩০০ থেকে ১,৮০০ টাকা । ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১,২০০ থেকে ১,৩০০ টাকা । ৪০০ গ্রাম বা তার নিচে ওজনের ইলিশের দাম ছিল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি কেজি। অর্থাৎ, চলতি বছরের দাম এখনও গত দুই বছরের তুলনায় বেশি, যদিও গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে।
নতুন বাজারের মাছ বিক্রেতা আলমগীর বলেন, এক সপ্তাহ আগেও আধা কেজি আকারের ইলিশ ১,৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি, এখন সেটা ১,০০০ টাকা। সরবরাহ ভালো থাকায় দাম আরও কিছুটা কমতে পারে। দাম কমায় অনেক ক্রেতা বলছেন কিছুটা দাম কমলেও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। দৌলতপুর বাজারে ইলিশ কিনতে আসা আরজিনা খাতুন বলেন, আগে দাম বেশি থাকায় একটার বেশি কিনতে পারিনি, আজ ১কেজি জাটকা কিনে ফেললাম। আশা করি সামনে আরও সস্তা হবে।
ফুলবাড়িগেট বাজারের হাসিব বলেন, দাম কিছুটা কমেছে ঠিকই, কিন্তু এখনও আমাদের মত মধ্যবিত্বের নাগালের মধ্যে আসেনি। নিউমার্কেট বাজারে গৃহিণী আয়েশা বেগম জানান, গত সপ্তাহে ১,৮০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হয়েছে, আজ ১,৩০০ টাকায় পেয়েছি। এই দামে বাজারে ভিড় বাড়বে। পাইকারি বাজারের চিত্র রূপসা আড়তের পাইকারি সরবরাহকারী কালাম শেখ বলেন, এখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সবচেয়ে কম দামে ইলিশ কিনতে পারছি। আগে বিক্রি করে ক্ষতির মুখে পড়েছি, এখন লাভের মুখ দেখবো।
আড়ৎদারদের মতে, স¤প্রতি সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে, বিশেষ করে বরিশাল অঞ্চল থেকে প্রতিদিন ট্রলারভর্তি মাছ আসছে। এর ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দাম আরও কিছুটা কমবে বলে তারা আশা করছেন।সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও ১০–১৫% কমতে পারে আগস্টের শেষ দিকে।
খুলনায় ইলিশ বাজারে দামের নি¤œগতি মৌসুমের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে দাম এখনো গত দুই বছরের তুলনায় বেশি, যা মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতাকে সীমিত রাখছে। সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল থাকলে সেপ্টেম্বর নাগাদ বাজারে ইলিশ আরও সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হতে পারে