১১ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) রাতেই যুদ্ধ বিরতিতে গেছে ইসরায়েল ফিলিস্তিন। সংঘর্ষ বিরতির পরই তাই প্রশ্ন উঠছে, এই যুদ্ধে কী পরিমাণ ক্ষতি হলো দুই দেশের। সেই হিসাব দিতে নেমেছে দুই দেশের নেতারা।

হামাস মিডিয়ার দাবি করেছে, গত কয়েকদিনে ইসরায়েলি রকেট বেছে বেছে টার্গেট করেছে ফিলিস্তিনের শিল্প-কারখানা গুলোকে। ব্যাপকতার দিক থেকে তাই এবার ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা বেশি।

প্রাথমিক হিসাবে জানা গিয়েছে, সব কিছু মিলিয়ে গত ১১ দিনে প্যালেস্তাইনের ক্ষতি আনুমানিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিধ্বস্ত দেশের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোও। এখানে শেষ নয়, এর সঙ্গে যোগ হবে আরও ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ক্ষতি দেশের কৃষিক্ষেত্রে। ইসরায়েলি রকেট হামলায় সবুজ কৃষিক্ষেত্র এখন ধূসর হয়ে গিয়েছে।

যুদ্ধকালীন ১১ দিন ইসরায়েলের বোমা হামলা থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনিকে জাতিসংঘের পরিচালিত স্কুল গুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। শনিবার (২২ মে) সকালে বাড়ি ফিরে অনেক ফিলিস্তিনিকেই খোলা আকাশের নিচে, রাস্তার পাশে থাকতে দেখা গেছে। জীবনের বেঁচে থাকার জন্য রসদ সংগ্রহের কাজ চলছে সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকেই। কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্র কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ফলে থমকে আছে টিকাকরণ ও প্রয়োজনীয় পরিষেবা।

ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় এক হাজার পৃথক বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ইসরায়েলের বোমা হামলায়, মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৭০০ ঘর-বাড়ি, এছাড়াও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ হাজার ঘর।

ইসরায়েলের হামলায় যে পরিমাণ ক্ষতি হলো ফিলিস্তিনের

এদিকে শিল্প, বিদ্যুৎ ও কৃষি খাতের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে ১০ কোটি মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। অনেক এলাকায় পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

আর উল্টোদিকে বিশেষজ্ঞদের দাবি, কোনো ক্ষতি নেই ইসরায়েলের। পুরোটাই ‘লাভ’। আন্তর্জাতিক সামরিক বিশেষজ্ঞ জন টমাসের দাবি, “গত ১১ দিনে গাজার উপর পরীক্ষামূলকভাবে এমন কিছু সমরাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা আগামী সময়ে বিশ্বের বাজারে আনতে চলেছে ইসরায়েল।
বিশেষজ্ঞদের এই দাবিতে খানিকটা চাপেই তেল আবিব। পুরো বিষয়টিকে তারা এখন পর্দার আড়ালে রাখার চেষ্টা করছে। ইসরায়েল সরকারের পালটা দাবি, গাজা থেকে হামাসের রকেট হামলার জবাব দেওয়া হয়েছিল। এর থেকে আর বেশি কিছু নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের কাছে, এই যুক্তি ‘ঠুনকো’ বলেই মনে হচ্ছে।