স্টাফ রিপোর্টার ঃ পাটকল রক্ষায় শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে গতকাল অনুষ্ঠিত মানব বন্ধন থেকে বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় মিল আবারও রাষ্ট্রীয় মালিকানায়ই চালু করতে হবে। পাওনা না পেয়ে শ্রমিক পরিবারগুলো আজ অসহায় অবস্থায় দিন যাপন করছে। কিভাবে ঈদ করবে সে চিন্তায় বেকার শ্রমিকদের ঘুম হারাম। অথচ শ্রমিকদের জন্য কোন করুনা চাওয়া হচ্ছেনা বরং পাওনা পরিশোধের দাবি তাদের। টাকার অভাবে অনেকের ঘর ভাড়া বাকী পড়েছে, সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এক বিভিষিকাময় অবস্থা বিরাজ করছে শ্রমিক পরিবারগুলোতে। এ অবস্থায় যদি ঈদের আগে পাওনা পরিশোধ না করা হয় তাহলে ঈদের পর শ্রমিকরা প্রয়োজনে আত্মাহুতির কর্মসূচি দিতেও বাধ্য হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এ মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি মো: রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তৃতা করেন, শ্রমিক নেতা মো: আলমগীর কবির, শামস শারফিন শ্যামল, ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র সামিউল ইসলাম অনিক, শ্রমিক নেতা উজ্জল আহমেদ, মো: আলমগীর হোসেন, দৈনিক কালের কন্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. আফম মহসীন, মনির হোসেন, মোশাররফ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা আরও বলেন, কিছু কিছু মন্ত্রী-আমলা সরকারকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। যার আলোকে শ্রমিকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ২০২০ সালের ২ জুলাই থেকে দেশের ২৬টি পাটকল বন্ধ করে ৬০ হাজার শ্রমিককে বেকার করা হয়েছে। বিজেএমসি, জুট মিল, কর্মকর্তা সব বহাল থাকলেও বেকার করা হয়েছে শুধুমাত্র শ্রমিকদের। অথচ যে অজুহাত দিয়ে মিলগুলো বন্ধ করা হয়েছে অর্থাৎ কেনা-বেচার সাথে শ্রমিকরা কখনই জড়িত নয়। তারা উৎপাদনের সাথে জড়িত এবং মাথার ঘাম পায়ে ফেলে উৎপাদন করলেও তাদেরকেই শেষ পর্যন্ত বেকার করা হলো। এটি চরম মানবাধিকার লংঘন এবং এক প্রকার শ্রমিকদের সাথে প্রতারণার শামিল বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা পাটমন্ত্রীর খামখেয়ালীপনাকে দায়ী করে বলেন, পাটমন্ত্রী যখন প্লাষ্টিকের ব্যবসায়ী হন তখন তার কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায়না। তবে শ্রমিক বান্ধব সরকার প্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এসব বিষয়ের প্রতি নজর দেয়া উচিত বলেও শ্রমিকরা মনে করেন। শ্রমিক নেতারা বলেন, তাদের প্রতি করুনার প্রয়োজন নেই, পাওনা দেয়া হোক।
শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব যে দপ্তরের সেই শ্রম দপ্তরের খুলনার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে শ্রমিক নেতারা বলেন, ওই কর্মকর্তা শ্রমিকদের পাওনা আদায়ের পরিবর্তে তাদের সাথে প্রতারণা করছেন। শ্রম বিভাগের ওই কর্মকর্তাই শ্রম আইন লঙ্ঘন করছেন বলেও বক্তারা দাবি করেন।
সবশেষে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের প্রস্তাবনার আলোকে ১২শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় আবারও পাটকলগুলো চালুর জন্য আগামী জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের দাবি জানান শ্রমিক নেতারা।