একবছরে বরাদ্দ কমেছে ২৬০ কোটি টাকা # বড় প্রকল্প ঝুলে আছে ৪ বছর
এ এইচ হিমালয় : গত ৪ বছরে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সড়ক, অবকাঠামো ও জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন কোন প্রকল্প অনুমোদন হয়নি। পুরাতন প্রকল্পগুলোও চলতি বছর শেষ হচ্ছে। এতে কমে গেছে খুলনা মহানগরীর উন্নয়নে আসা সরকারি বরাদ্দ। মাত্র একবছরের ব্যবধানে কেসিসির বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে প্রায় ২৬০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দুর্যোগপ্রবণ উপক‚লীয় মহানগর খুলনায় নানা সংকট চলছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বেশকিছু খাল খনন ও অনেক এলাকায় ড্রেন নির্মাণ বাকি রয়েছে। কেসিসির আভ্যন্তরীণ অবকাঠামো সংকটও প্রকট। নগরীর বেশিরভাগ সড়কের সংস্কারও জরুরী। এজন্য কেসিসির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন নামের একটি প্রকল্প নিয়ে চিঠি চালাচালি চলছে ৪ বছর ধরে। দ্রæত প্রকল্পটি অনুমোদন এবং বরাদ্দ না বাড়ালে খুলনার মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, খুলনা মহাগরীর গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন এবং খুলনা মহানগরীতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন নামের প্রকল্প দুটি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুমোদন হয়। প্রায় ১ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকার দুই প্রকল্পের মধ্যে সড়ক মেরামতের প্রকল্পটি গত অর্থবছরে এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। ২০২১ সালে অনুমোদন হওয়া কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পও শেষ হচ্ছে চলতি অর্থবছরে। এরপর সরকারি অর্থায়নে চলা কোনো প্রকল্পই কেসিসিতে থাকছে না।
কেসিসির হিসাব বিভাগ থেকে জানা গেছে, কেসিসির নিজস্ব আয় দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উন্নয়ন কাজের পুরোটাই আসে প্রকল্পের অনুক‚লে সরকারি বরাদ্দ এবং দাতা সংস্থার অনুদান থেকে। নতুন কোনো প্রকল্প অনুমোদন না হলে উন্নয়ন কাজে বরাদ্দও পাওয়া যাবে না।
সূত্রটি জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেসিসির বাজেটের আকার ছিল ৮৬১ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০৮২ কোটি, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৮১ কোটি এবং চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৭২১ কোটি টাকার বাজেট। চলতি মাসেই এই বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে।
কেসিসির বাজেট কাম অ্যাকাউন্ট অফিসার মো. মনিরুজ্জামান জানান, সরকারি প্রকল্প কমে যাওয়া অর্থ বরাদ্দও কমছে। এজন্য বাজেটের আকারও ছোট হচ্ছে।
হিসাব শাখার কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কেসিসির উন্নয়ন কাজে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩১৭ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসেছে ২২৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে কমতে থাকা উন্নয়ন বরাদ্দের কারণে নগরীর কাংখিত উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, কেসিসির ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের প্রকল্প গত জুনে শেষ হয়েছে। অন্যান্য কয়েকটি সড়ক, জিয়া হল কমপ্লেক্স, ওয়ার্ড অফিস, ড্রেন নির্মাণের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি নিয়ে ৪ বছর ধরে চিঠি চালাচালি চলছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে কেসিসির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার বলেন, কেসিসির অবকাঠামো ও অন্যান্য উন্নয়নের নেওয়া বড় প্রকল্পটি দ্রæত অনুমোদনের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দাতা সংস্থার অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।