করোনার প্রভাবে দেশে কর্মসংস্থান হারিয়েছে দেশের অন্তত ১১ থেকে ১৬ লাখ তরুণ। এর প্রভাবে আয় কমেছে সাধারণ মানুষের। ২ কোটি শ্রমশক্তি তাদের আয় কমে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে দেশের ২০ লাখ কলেজপড়ুয়া এবং ১০ লাখ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে। করোনার এই সময়ে, কিশোর-কিশোরীদের দৈনন্দিন রুটিন ব্যাহত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের অভাব, অভিভাবকদের আয় কমে যাওয়া, মহামারি সম্পর্কিত অনিশ্চয়তার উদ্বেগ কিশোরদের ওপর বিরূপ মানসিক প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে অলসতা, ব্যাধি যা শেষ পর্যন্ত স্থূলতা, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং ডায়াবেটিস বাড়াতে পারে। জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন (এনএইচডিআর)-২০২১ এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বিআইডিএসের গবেষণার বরাদ দিয়ে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাবে আয় কমে যাওয়ায় দেশে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছিল। সব মিলিয়ে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ বা ৬ কোটি পর্যন্ত হয়েছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার এর প্রকাশনা অনুষ্ঠান ভাচু‌র্য়ালি সম্পন্ন হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) উদ্যোগে ভাচু‌র্য়াল প্ল্যাটফরমে এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ইআরডি ‘বাংলাদেশের জনগণই সকল উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশের বরেণ্য গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত এই প্রতিবেদনে বর্তমান অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা তুলে ধরার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করার জন্য পাঁচটি কৌশলগত বিষয়কে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই পাঁচটি কৌশলগত বিষয় হলো—মানব উন্নয়ন ও বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন, যুবদের কর্মসংস্থান, কিশোর-কিশোরীর স্বপ্নের বাংলাদেশ এবং শান্তি ও সমৃদ্ধি—এই পাঁচটি আন্তঃসম্পর্কযুক্ত বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে জনগণের জীবনমানের গুণগত উন্নয়নের কৌশল এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশকে আজ বিশ্বে চিহ্নিত করা হচ্ছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। আর এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের গুণে। তিনি আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে শুধু অর্থনৈতিক নয় আর্থ-সামাজিক এবং মানব উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাতীয় মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনের মুখ্য সমন্বয়কারী ও উপদেষ্টা ড. সেলিম জাহান, এনএইচডিআরের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী আলোচনায় অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে গত ৯ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী এই প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর নিকট তুলে দেন।