করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে ডেক্সামেথাসোন নামের একটি সস্তা ও সহজলভ্য ওষুধ সহায়ক হতে পারে বলে বড় ধরনের একটি পরীক্ষায় উঠে এসেছে।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্বল্প মাত্রার এই স্টেরয়েড চিকিৎসা একটা যুগান্তকারী আবিষ্কার বলে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, এই ওষুধ ব্যবহার করলে ভেন্টিলেটারে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমানো যাবে। আর যাদের অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার এক পঞ্চমাংশ কমানো যাবে।

গবেষকরা ধারণা করেছেন, ওষুধটি যদি যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই ব্যবহার করা হত, তবে ৫ হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো যেত।

তারা বলছেন বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে কোভিড ১৯ রোগীদের চিকিৎসায় এই ওষুধ বিশালভাবে কাজে লাগতে পারে। এবং যেসব দেশ রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে এটা তাদের জন্য বিশাল সুখবর।

গবেষকেরা বলছেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রে ডেক্সামেথাসোন নেয়া রোগীদের ফলের সঙ্গে ওই ওষুধ না নেয়া ৪ হাজার রোগীর অবস্থা মিলিয়ে দেখা হয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের দেহে এই ওষুধটি এরই মধ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছে। দেখা গেছে, রোগীর দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে, তখন যেসব ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তা থামাতে ডেক্সামেথাসোন কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মানুষের দেহে যখন এই অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে, তখন তাকে বলে সাইটোকাইন স্টর্ম। এটি রোগীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ডেক্সামেথাসোন এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দলের নেতৃত্বে এই পরীক্ষায় হাসপাতালের প্রায় ২ হাজার রোগীকে ডেক্সামেথাসোন দেয়া হয়েছিল। তাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল এই ওষুধ পায়নি এমন প্রায় ৪ হাজার রোগীর।

ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে এটি মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৮ শতাংশ করেছে। আর অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীর ক্ষেত্রে এটি মৃত্যুর ঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করেছে।