প্রায় পাঁচ মাস ধরে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ
তিপ্পান্ন দিনের মাথায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সুখবর পেলেন। অবশেষে ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত একজনের ওপর আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হলো। এমন সুখবর দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পত্র জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের(ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান পেলেন কুয়েটের আর্থিক ক্ষমতা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব এ.এস.এম. কাসেম স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘ইউজিসি’র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে কুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক বেতন-ভাতাদি প্রদানের নিমিত্ত সাময়িক সময়ের জন্য আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।’
এর আগে গত ২২ মে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলী পদত্যাগ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি গত ঈদ-উল-আযহার বোনাসও পাননি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। একদিকে গত ১৮ ফেব্রæয়ারি থেকে কুয়েটে অচলাবস্থা চলছে সেই সাথে ২২ মে থেকে ভিসিবিহীন থাকায় সংকট আরও প্রকট হতে থাকে। এর মধ্যে কুয়েটের ভিসি নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটিও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন গ্রহণ করেছে। যেটি এখনও চ‚ড়ান্ত না হওয়ায় আর্থিক ক্ষমতা দিয়ে আপাতত: বেতন-ভাতাদির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অপরদিকে, কুয়েটের বিগত এক বছরে বিধিবহির্ভুত নিয়োগ এবং বিভিন্ন মাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের লক্ষ্যে ইউজিসি থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত ১৪ জুলাই ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোঃ মহিবুল আহসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ওই কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটির আহবায়ক করা হয় ইউজিসি’র প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মোঃ সাইদুর রহমান এবং সদস্য সচিব করা হয় ইউজিসি’র প্রশাসন বিভাগের উপ-সচিব নুরনাহার বেগম শিউলীকে। এ কমিটির একমাত্র সদস্য হলেন, ইউজিসির সচিব ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রæয়ারি কুয়েটে শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভিসি-প্রোভিসি এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় ভিসি বিরোধী এক দফা দাবিতে। দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস টানা আন্দোলন আমরন অনশন শেষে কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অপসারণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর গত ১ মে চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলীকে অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি নিয়োগ দেওয়ার পর শিক্ষক লাঞ্ছিতের বিচার দাবিতে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। এভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে গত ১৯ মে খুলনা ত্যাগ করেন অধ্যাপক ড. হযরত আলী। এরপর ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন ভিসির পদ থেকে। সেই থেকে এখনও যেমন কুয়েটের প্রশাসনিক কার্যক্রম প্রায় অচল তেমনি বেতন-ভাতাদি নেই। আবার প্রায় পাঁচ মাস হতে চললো ক্লাস-পরীক্ষা সব বন্ধ।