কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একই চত্বরে অবস্থিত বেসরকারি টেসল ইংলিশ ভার্সন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এবং নীচতলার সব শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষ ও বারান্দায় জমে থাকা পানিতে পচা আবর্জনা ভাসছে। তীব্র দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বসা দুঃসহ হয়ে উঠেছে, ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত ও বিগ্নিত হচ্ছে চরমভাবে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চারপাশের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে দূর্গন্ধযুক্ত পচা পানিতে চলাচল করায় একাধিক শিক্ষার্থী চর্মরোগসহ শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছে।
এ বিষয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াস বলেন, পানির মধ্যে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়, আবার সেভাবেই বাড়ি ফিরতে হয়। এতে হাতে-পায়ে চুলকানিসহ চর্মরোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারনে অনেকেই স্কুলে আসাও বন্ধ করে দিয়েছে।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রশোন আহমেদ তানিম জানান, বিদ্যালয়ে পানি জমে থাকায় ঠিকমত ক্লাস হচ্ছে না। আমরা আজ প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেছি, তিনি দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন।
আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, প্রতি বছরই বর্ষায় কিছুটা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। যদি দ্রæত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হতে পারে। আপাতত দুই দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার থেকে ক্লাস শুরুর চেষ্টা করব।
এদিকে অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বারবার প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তারা জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশন ও পরিচ্ছন্নতার দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আশপাশে মাটি ভরাট করে ভবন নির্মাণ করায় স্বাভাবিক গতির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে।
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিকবার উপজেলা সমন্বয় সভায় বলেছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমার ইউনিয়ন পরিষদসহ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। আজ দুটি বিদ্যালয়ই ছুটি দিয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইতোমধ্যে বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করেছেন। দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।