উন্নয়নের গতিধারায় পাল্টে যাবে নগর জীবনের চিত্র

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডে ৩১টি পুকুর সংরক্ষণ করা হবে। থাকবে সুইমিং পুলও। এর মধ্যদিয়ে আগামী প্রজন্ম সাঁতার শেখার সুযোগ পাবে। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বেড়ে উঠবে তারা। খুলনার ময়ূর নদীসহ আট কিলোমিটারজুড়ে খাল খননের জন্য টেন্ডার দেয়া হচ্ছে শীঘ্রই। এর বাইরে খুলনা ওয়াসার পয়:নিষ্কাশন লাইনের কাজ শুরু হবে। এভাবেই পাল্টে যাবে খুলনার নগর জীবনের চিত্র।
এছাড়া করোনা মহামারীর কারণে গত বছর নগরীর উন্নয়নকাজে যে মন্থর গতি এসেছিল তাতে কিছুটা গতি আসলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আবারো তা’ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে নগরীতে যে হারে উন্নয়ন কর্মকান্ড হচ্ছে তাতে এককভাবে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে তদারকি করা সম্ভব নয়। এজন্য নাগরিক তথা জনসাধারণকে প্রতিটি উন্নয়ন কর্মমান্ডে সম্পৃক্ত হতে হবে। খুলনা নাগরিক ফোরাম সক্রিয় হলে নগরীর উন্নয়ন কর্মকা- আরও গতিশীল হবে।
সুশাসন উন্নয়নে জনসম্পৃক্তকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নগরীর ড্রেনেজ কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে অনেক বাড়িই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে বিল্ডিং কোড না মেনে বাড়ি করা। সুতরাং এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে কেসিসিকে নাগরিকদের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। নাগরিক ফোরাম সক্রিয় থাকলে তারা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্য উন্নয়নের স্বার্থেই তিনি অরাজনৈতিক এ সংগঠনটির সক্রিয়তা আশা করেন।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন, রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন গুহ এবং পরিচালনা করেন নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) লস্কার তাজুল ইসলাম এবং খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি এস. এম. নজরুল ইসলাম।
গতকাল রোববার বিকেলে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ১৪ মাসব্যাপী ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্প চলবে আগামী বছর ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কেসিসি’র প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু, কেসিসি’র কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী, খুলনা মহানগর নাগরিক ফোরামের মহাসচিব প্রদ্যুৎ রুদ্র চৈতী, নাগরিক নেতা নাসির জাভেদ, মোঃ সাবির খান, রফিকুল হসলাম বাবু, সাদিকুর রহমান সবুজ, কুলসুম জাহান হীরা, মিজানুর রহমান রাজা, সাংবাদিক এইচ এম আলাউদ্দিন, মোঃ নূরুজ্জামান, যুব ফোরাম খুলনার আহ্বায়ক রুকসানা পারভীন প্রমুখ।
সভায় জানানো হয়, প্রকল্পের কাজের মধ্যে থাকছে নাগরিকদের সক্রিয়করণ, নাগরিকদের সোশ্যাল অডিট এবং পাবলিক সার্ভিস মনিটরিংয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি, সেবা প্রদানকারী সংস্থা/কেসিসি প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ সভা, প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের অংশগ্রহণমূলক কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে জনসম্পৃক্তকরণ নিশ্চিত করা, কেসিসির বাজেট ঘোষণার আগে নাগরিক ও কেসিসির মতবিনিময়, নগরীতে সিটিজেন চার্টার স্থাপনের মাধ্যমে কেসিসির সেবা প্রদান সম্পর্কে অবহিতকরণ, সাংবাদিকদের মাধ্যমে নগরীর সর্বস্তরের জনগণের মাঝে বস্তুনিষ্ঠ এবং সত্য তথ্য আদান প্রদান করা এবং কেসিসি’র সামগ্রিক উন্নয়ন ও সেবায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র আরও বলেন, নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য যেসব জমি ইতোপূর্বে অধিগ্রণ করে রাখা হয়েছিল সেগুলো নাগরিকরাই বিভিন্নভাবে বেদখল করে রেখেছে। এজন্য উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অথচ পদ্মা সেতু নির্মাণ হওয়ার সাথে সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীর যোগাযোগের যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি হবে তাতে খুলনা নগরীকে নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে। এজন্য এখনই কেসিসির সহযোগী হিসেবে নাগরিক ফোরামকে কাজ করার জন্য তিনি আহবান জানান। তিনি নাগরিক ফোরামের সাথে সাথে যুব নাগরিক ফোরামকেও সক্রিয় করার আহবান জানান।