তালায় ডাকাতির নয়া কৌশল
অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে মানুষ। প্রায় রাতে কোথাও না কোথাও খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ দিচ্ছে । বিষক্রিয়া শুরু হয়ে সংজ্ঞানহীন অচেতন হয়ে পড়লে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার,নগত টাকা সহ সর্বস্বান্ত করছে প্রতিটি পরিবারকে। ক্রমান্নয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির আশংকায় উৎকণ্ঠায় প্রতিটা রাত্র নিদ্রাহীন ভাবে পার করছে গ্রামের প্রতিটা মানুষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তাদের কার্যক্রম করতে না পারায় অপরাধ জগতের সদস্যরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
গতকাল শুক্রবার মাঝিয়াড়া আব্দুর রহমান গাজীর কনিষ্ঠ পুত্র মোঃ কামরুল গাজী(৪৫)কে দুধের সাথে চেতনানাশক মিশায় একটি ডাকাত চক্র। দুধ খাওয়ার সাথে সাথে বুক জ্বালা পোড়া করতে থাকে। মুহুর্তের মধ্যে সংজ্ঞানহীন হয় পড়লে তালা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। কামরুল গাজীর স্ত্রী খাবার না খাওয়ার কারণে ডাকাতি করতে ব্যর্থ হয় চক্রটি। ইতিপূর্বে মাঝিয়াড়া সুনিল দেবনাথের বাড়িতে তরকারী ডাউল এর সাথে চেতনাানশক মিশ্রিত করলে সুনিল দেবনাথ, অসিম দেবনাথ,তার পুত্র অমিত দেবনাথ,সুনিল দেবনাথের স্ত্রী বিজলী দেববনাথ উক্ত খাবার খেয়ে সাথে সাথে সংজ্ঞানহীন হয়ে পড়ে । অসিম দেবনাথের স্ত্রী রাতের খাবার না খাওয়ায় উক্ত বাড়িতে ডাকাতি করতে পারেনি। তাদের তালা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
মাঝিয়াড়া গ্রামের ডাঃ সৈয়দ মনজু ও তার স্ত্রী খাবারের সাথে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে তারা স্বামী স্ত্রী সংজ্ঞানহীন হয়ে পড়লে তাদের বাসা থেকে ২০ ভরি সোনা,নগত টাকা মিলিয়ে অনুমান প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। সকাল বেলায় তার ভাই ভাইপোরা তাদের সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দেখে তাদের তালা হাসপাতালে ভর্তি করে। সম্প্রতি দক্ষিণ আটারই গ্রামের আব্বাস আলী সরদার এর বাড়িতে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে পরিবারের সবাই অচেতন হয়ে পড়ে। এসময় ডাকাতরা একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল যার অনুমান মূল্য দেড়লক্ষ টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায় চক্রটি। মধ্য আটারই আবুল কাশেম শেখ এর বাড়ির সদস্যদেও একই প্রক্রিয়ায় সংজ্ঞানহীন করে ১ টি ল্যাপটপ,নগদ ৫০ হাজার টাকা ডকাতি করে নিয়ে যায়। ভায়ড়া গ্রামের করিম শেখ বাড়ির সদস্যরা চেতনানাশক খাবার খেয়ে পরিবারের সকলকে অচেতন হয়ে পড়ে। ওই বাড়ি থেকে ডাকাতরা ১ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে নিয়ে যায়। উত্তর আগোলঝাড়া গ্রামের মোঃ আরিজুল শেখ এর পরিবারকে চেতনা নাশক মিশ্রিত খাবার খেয়ে পরিবারের সকলে অচেতন হয়ে পড়লে গরু বিক্রয়ের ৩ লক্ষ টাকা সহ বাড়ির সাথে থাকা দোকানে ডাকাতি করে নিয়ে যায়। জেয়ালা গ্রামের হরে কৃষ্ণ মনির বাড়িতে খাবারের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশাইয়া দেয়। সেই খাবার খেয়ে তারা সকলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। তেঁতুলিয়া গ্রামের তৌফিক ইমরান এর বাড়িতে খাবারের সাথে চেতনানাশক মিশানো হ। তৌফিকের স্ত্রী ও সন্তান সেই খাবার খেয়ে সংজ্ঞানহীন হয়। তৌফিক সরকারী সমাজ সেবা অফিসে চাকুরী করেন। সে খাবার না খাওয়ায় তার বাড়িতে ডাকাতি করতে ব্যার্থ হয়। এভাবে প্রতি রাতে তালা থানায় কোন না কোনো গ্রামে খাবারের সাথে চেতনা নাশক মিশিয়ে পারবারের সবাইকে অজ্ঞান করে ডাকাতির নয়া কৌশলে কোটি কোটি টাকা ডাকাতি করা হচ্ছে!
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাইন উদ্দিন জানান, তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। অপরাধীদের চিহ্নিত করতে কার্যক্রম চলছে। কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।