খুমেক’র ল্যাব জীবাণুুমুক্ত করে রোববার থেকে আবারো শুরু
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে জীবাণুুর সংক্রমণ হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তিনদিনের জন্য খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে করোনার রোগীদের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই ৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের করোনা পজেটিভ এবং ২৫ জনের নেগেটিভ হয়। অর্থাৎ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তিকৃত করোনা রোগীদের মধ্যে ওই ২৫ জনের নেগেটিভ ফলাফল হওয়ায় তাদেরকে ছাড়পত্র দিতে পারছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ বলেন, গতকাল থেকে খুমেক’র পিসিআর ল্যাবটি জীবাণুমুক্ত করার কার্যক্রম শুরু হয়। যা চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। এই তিনদিন খুমেক’র পিসিআর ল্যাবের কীডস্, রি-এজেন্ট ও জনবল দিয়ে খুবি’র ল্যাবে পরীক্ষাগুলো করা হবে। তবে যেহেতু খুবি’র ল্যাবে প্রতিদিন ৯৪টি পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে সেহেতু এই তিনদিন শুধুমাত্র দু’টি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা কোভিড রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হবে। এদের সাথে যুক্ত হবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাদের রুটিন অপারেশন করা হবে তাদের তালিকা। তবে আগামী রোববার থেকে খুলনা মেডিকেলের পিসিআর ল্যাবে আগের মতো সকল রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গতকাল খুবি’র ল্যাবে যে ৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয় তার মধ্যে খুলনার ৫৭জন, বাগেরহাটের পাঁচজন, সাতক্ষীরার দু’জন এবং যশোরের দু’জন রয়েছেন বলেও তিনি জানান।
এদিকে, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে আগত প্রতিনিধিদের ল্যাবে স্বাগত জানান। এসময় সেখানে মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি পত্র, নমুনা ও কীট হস্তান্তর করা হয়। পরে বিশ্বদ্যিালয়ের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের পরিচালক প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাস ও যুগ্ম পরিচালক ফোকাল পয়েন্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কাজী দিদারুল ইসলাম ল্যাবের সায়েন্টিফিক অফিসার ও টেকনিশিয়ানদের নমুনা বুঝিয়ে দেন। এরপরই সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে উভয় প্রতিষ্ঠানের ৮ জন টেকনিশিয়ান প্রথমদিন যৌথভাবে ৯১টি নমুনা পরীক্ষা করেন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সফটওয়্যারে পাঠানো হয়।
অপরদিকে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তার দায়িত্ব গ্রহণের স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরটি পিসিআর মেশিনে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশ ও জাতির পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত। তিনি ল্যাব চালুর ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ছিলো দেশ ও জাতিকে ভালোবাসা এবং দুর্যোগকালে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাঁর সেই আদর্শের পথ ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মহামারির এই দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় বিশ্বমান অর্জনে সচেষ্ট। একই সাথে দেশের যে কোন প্রয়োজনে সক্ষমতা অনুযায়ী অবদান রাখতে বদ্ধপরিকর।
উল্লেখ্য, বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই করোনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্নের নির্দেশনা দেন এবং তারই ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই আরটি পিসিআর মেশিন চালুসহ করোনার নমুনা পরীক্ষার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। গত মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রশাসনের প্রতিনিধিরা দু’বার এই ল্যাব পরিদর্শন করেন। তাদের পরামর্শগুলো আমলে নিয়ে ইতোমধ্যে তা বাস্তবায়ন করে করোনার নমুনা পরীক্ষার সম্পূর্ণ উপযোগী করা হয়েছে।