নারী চিকিৎসকের আত্মহত্যা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ আগের বিয়ের কথা গোপন রেখেই বিয়ের প্রলোভনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার শিক্ষানববিশ চিকিৎসক ডা: মন্দিরা মজুমদারের সাথে একাধিকবার রাতযাপন করেন। এরপর বিয়ের জন্য বলা হলেও রাজী না হয়ে বরং তাকে হুমকি দেয়া হয়। যে কারণে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ডা: মন্দিরা। আর এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী হিসেবে ডা: সুহাসসহ দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন নিহতের পিতা প্রদীপ মজুমদার।
শুক্রবার দায়েরকৃত ২১ নম্বর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মন্দিরা মজুমদার পিরোজপুর সদর এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যরা নগরীর মজিদ সরনির সাত্তার বিশ^াস সড়কে বসবাস করেন।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মন্দিরা মজুমদার (২৬)। মজিদ স্মরণীর ৮৮/১ এর বাড়িতে থেকে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকেন তিনি। এর আগে একই বছরের ৩০ এপ্রিল মন্দিরার পিতা প্রদীপ মজুমদার পিত্তথলি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। যার অপারেশনের দায়িত্ব পড়ে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং বর্তমানে খুমেক হাসপাতালে সংযুক্ত থাকা ডা: সুহাস রঞ্জন হালদারের ওপর। মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হওয়ায় উভয়ের মধ্যে পরিচিতি হয়।
কিন্তু ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার পূর্বে বিয়ের ঘটনাটি না জানিয়ে প্রেম নিবেদন করলে মন্দিরা সেটি গ্রহণ করেন। এমনকি ডা: সুহাসের আপন বোন সিথি রানী হালদারের বাগেরহাটের দশানী এলাকার বাসায় নিয়ে তার সাথে একাধিকবার রাত্রিযাপন করেন। পরে সুহাসের বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তিনি তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাকে হত্যাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেওয়া হয়। যে কারণে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি ঘরের ফ্যানের হুকের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার এ আত্মহত্যার জন্য ডা: সুহাস ও তার বোন সিথি মনি হালদারকে অভিযুক্ত করা হয়।
তবে কেএমপির সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোমতাজুল হক বলেন, মামলা হলেও আসামীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বিএমএ’র শোক ঃ এদিকে, ডা: মন্দিরা মজুমদারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন-বিএমএ, খুলনা’র নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে ডা: মন্দিরার আত্মহত্যার প্ররোচনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন, খুলনা বিএমএ’র সভাপতি ও র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম, খুলনা বিএমএ’র সহ-সভাপতি, অধ্যাপক ডা. ধীরাজ মোহন বিশ্বাস,ডা. গাজী মিজানুর রহমান, ডা. মোল্যা হারুন অর রশিদ, সাধারন সম্পাদক ডা. মোঃ মেহেদী নেওয়াজ,কোষাধ্যক্ষ ডা. প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, যুগ্ম-সম্পাদক ডা. বঙ্গ কমল বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মোঃ মামুনূর রশিদ, প্রচার ও জন-সংযোগ সম্পাদক ডা. সুমন রায়, বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ডা. এস কে বল্লভ, সাংস্কৃতি ও আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. পরিতোষ কুমার চৌধূরী,সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রকাশনা ও গ্রন্থাগার সম্পাদক ডা. মাহমুদ হাসান লেনিন, কার্যকরী পরিষদ সদস্য ডা. আনোয়ারুল আজাদ, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মহসীন, অধ্যাপক ডা. মনোজ কুমার বোস, ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, ডা. ডালিয়া আখতার, ডা. দেবনাথ তালুকদার রনি, ডা. খান আহমেদ হেলালি, ডা. মোহাম্ম হাসান, ডা. হিমেল সাহা, ডা. সোহানা সেলিম, ডা. কাজী করিম নেওয়াজ,ডা. ইউনুচ উজ জ্জামান খান তারিম, ডা. বাপ্পারাজ দও, ডা.এস এম তুষার আলম, ডা .মোঃ রকিবুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম মুকুল, ডা. পলাশ কুমার দে, ডা. শৈলেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, ডা. পার্থ সারথী শিকদার, ডা. সুদীপ পাল, ডা. তন্ময় সাহা প্রমুখ।