# জেনারেল হাসপাতালের ৭০ বেড আগামী সপ্তাহে

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটকে একশ’ বেড থেকে ১৩০ বেডে উন্নীত করা হয়েছে। এখন থেকে এ হাসপাতালটির নাম হলো ১৩০ শয্যা বিশিষ্ট ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল। তবে গতকালও এ হাসপাতালে রোগী ছিল ১৩৯জন। বেড বাড়লেও রোগীর চাপ সামলানো যাচ্ছেনা। ফলে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ৭০টি বেড নিয়ে আরও একটি করোনা হাসপাতালের যাত্রা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। এজন্য ওই হাসপাতালের রোগীদের মধ্যে যারা কিছুটা সুস্থ্য তাদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় দেয়া হচ্ছে। আবার যারা এখনও অসুস্থ্য তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। আজ-কালকের মধ্যেই খুলনা জেনারেল হাসপাতালকে রোগীশূণ্য করা হবে বলে প্রস্তাবিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: কাজী আবু রাশেদ জানিয়েছেন।
এদিকে, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের আন্ত:বিভাগে প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ রোগী ভর্তি থেকে যেমন চিকিৎসা সেবা পেয়ে আসছেন তেমনি বহি:বিভাগেও প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ’ রোগী বিভিন্ন বিভাগের সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু করোনা হাসপাতাল করা হলে এসব রোগীদের সকলকে খুমেক হাসপাতালে যেতে হবে। যেটি খুমেক হাসপাতালের জন্য আরও একটি চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের প্রস্তাবিত কোভিড হাসপাতালের মুখপাত্র বলেন, আপাতত: এ হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকসহ জনবল দিয়েই কার্যক্রম শুরু করা হবে। তবে করোনা ছাড়া অন্য কোন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে না। তাছাড়া খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে যেমন করোনা শনাক্ত রোগীদের পাশাপাশি করোনার উপসর্গ নিয়েও অনেককে ভর্তি করা হয়, এখানে তেমন সুযোগ নেই। এ হাসপাতালে শুধুমাত্র করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীদের ভর্তি করা হবে। সেই সাথে মূমূর্ষ রোগীদের মধ্যে যাদের আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন তাদেরও এখানে রাখা হবে না। অবশ্য এ হাসপাতালের নতুন ভবনের প্রথম থেকে চার তলা পর্যন্ত প্রতিটি তলায়ই রোগী রাখা হবে। কিন্তু চার তলা পর্যন্ত রোগী ওঠানোর জন্য কোন লিফটও নেই। সব মিলিয়ে রোগীদের ওঠানো নামানোতেও দুর্ভোগে পড়তে হবে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশংকা করছেন।
২২ ঘন্টায় ৫ জনের মৃত্যু ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল বুধবার রাত পৌনে নয়টা পর্যন্ত অর্থাৎ ২২ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত ছয় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের সূত্র জানিয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় মৃত্যু হয় বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার মজিনা খাতুন(৫৫) এবং গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় মৃত্যু হয় খুলনার ফুলতলার পায়গ্রাম কসবা এলাকার হাসিনা বেগম(৭৮) নামে একজনের। এর মধ্যে ফকিরহাটের মজিনা খাতুনকে ৫ জুন এবং ফুলতলার হাসিনা বেগমকে ১৩ জুন এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
এছাড়া গতকাল সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় খুলনার পাইকগাছার আবুল কাশেম(৭০), সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় যশোরের অভয়নগরের বিষ্ণু দত্ত(৫৬) এবং রাত পৌনে নয়টায় রূপসার কাজদিয়ার ইদ্রিস আলী গাজী(৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, গতকালও এ হাসপাতালে ১৩৯জন রোগী ভর্তি ছিলেন।
অপরদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ বলেন, গতকাল খুমেক’র আরটি পিসিআর ল্যাবে ৩৮৪টি নমুনা পরীক্ষার পর ১১১জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার ১০০জন, বাগেরহাটের তিনজন, সাতক্ষীরার তিনজন, যশোরের দু’জন, নড়াইলের একজন, ঝিনাইদহের একজন এবং মাগুরার একজন রয়েছেন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী গতকাল সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৮৪৬জন। এর মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৪৬জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৪১জন।