খুলনার করোনা পরিস্থিতি

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ৭০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের যাত্রার দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন বলে হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: কাজী আবু রাশেদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথম দিন যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তার নাম আব্দুল গনি(৬০) এবং তিনি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আওতাধীন পরিচালিত ১৩০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালেও গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ১৬১জন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার। গতকাল সকালে তিনি বিগত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যুর কথা জানান। তবে রোববার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল সোমবার বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে আরও ছয়জনের। যেটি করোনা হাসপাতালের রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে।
রোববার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন, বাগেরহাটের রামপালের বাইনতলার খান তায়েব আলী(৭৫), সাতক্ষীরার তালার সৈয়দ এডিএম শাহরিয়ার(৭১), নড়াইল সদরের খাদিজা পারভিন(৩৮), খুলনার খালিশপুরের মোশারফ হোসেন, রূপসার আনজুমান আরা আকতার(৫৫) এবং তেরখাদার তাসলিমা বেগম(৮০)।
করোনা হাসপাতালের রেকর্ডে উল্লেখ রয়েছে, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বাইনতলা এলাকার বাসিন্দা মৃত খান ইবারত আলীর পুত্র খান তায়েব আলী(৭৫) ১০ জুন ভর্তি হয়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আটারই এলাকার বাসিন্দা মৃত সৈয়দ আমীর আলীর পুত্র সৈয়দ এডিএম শাহরিয়ার(৭১) ১৯ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল সকাল সোয়া সাতটায় মৃত্যুবরণ করেন।
নড়াইল সদরের বড়গাতি এলাকার বাসিন্দা আ: হালিমের স্ত্রী খাদিজা পারভিন(৩৮) ১৪ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল সকাল নয়টা ৩৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
খুলনার খালিশপুর থানাধীন পোট কলোনীর বাসিন্দা ইয়াসিন ফকিরের পুত্র মোশারফ হোসেন ১৯ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল সকাল নয়টা ৫০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
রূপসা উপজেলার আইচগাতী এলাকার আশরাফুজ্জামানের স্ত্রী আনজুমান আরা আকতার(৫৫) গত ১৫ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল সকাল নয়টা ৫৫ মিনিটের সময় মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়া তেরখাদা উপজেলার জয়সোনা এলাকার বাসিন্দা মৃত: নূরুল হকের স্ত্রী তাসলিমা বেগম(৮০) রোববার ভর্তি হয়ে গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে, খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: গাজী মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, নগরীর টুটপাড়ার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান(৫৫), যশোরের কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা হায়দার আলী(৫৫), বাঘারপাড়ার পিপল(৩৫) এবং মনিরামপুরের মনোয়ারা(৬০)।
খুমেক ল্যাবে ১৭৭ পজেটিভ ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষার পর ১৭৭জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ জানিয়েছেন। এর মধ্যে খুলনার ১৫১জন, বাগেরহাটের ১১জন, সাতক্ষীরার তিনজন, যশোরের পাঁচজন, নড়াইলের তিনজন, কুমিল্লার একজন, বরগুনার একজন, নাটোরের একজন এবং টাঙ্গাইলের একজন রয়েছেন।
বিভাগে শনাক্ত ৯৪৫ ঃ খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা বলেন, গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় বিগত ২৪ ঘন্টায় ৯৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে এ পর্যন্ত বিভাগের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৯৭৭জন। এর মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৩৪ হাজার ৬১৭জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৩৭জন।
জেলায় শনাক্ত ১৭৫ ঃ খুলনার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার(রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা: শেখ সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরটি পিসিআর ল্যাব ও এন্টিজেন পরীক্ষায় সর্বমোট ১৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ওই সময়ে ৬১৫টি নমুনা পরীক্ষা হয় বলেও তিনি জানান। যার আক্রান্ত্রের হার ছিল ২৮শতাংশ। এছাড়া গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় নগরীর সোনাডাঙ্গা এবং জেলার বটিয়াঘাটা ও দিঘলিয়ায় একজন করে মৃত্যুবরণ করেন বলেও তিনি জানান।