খুলনার আলোচিত কিশোর ইয়াছিন ওরফে শুভ হত্যা মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই ) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এই রায় ঘোষণা করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী গনেশ কুমার দাস।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- খালিশপুর থানাধীন রায়েরমহল উত্তরপাড়ার বাসিন্দা শেখ শামসুর রহমানের ছেলে ইসরাফীল এবং সোনাডাঙ্গা থানার আন্দিরঘাট এলাকার বাসিন্দা শামসু শেখের ছেলে মিঠু। খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা আ: ছাত্তার মুন্সির ছেলে মো. আরেফিন মুন্সি এবং একই এলাকার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ নুরুর ছেলে আবুল কলাম আজাদ ওরফে ডিবি কালাম ও আ: ওহাব শেখের ছেলে মিরাজ।
২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি, মাত্র ১৪ বছর বয়সী কিশোর ইয়াছিন ওরফে শুভ কাজ করত মাসিক এক হাজার টাকায় শেখ শামসুর রহমানের বাড়িতে। সেদিন কাউকে না জানিয়ে সে চাচা কাওছার শেখের বাড়িতে চলে যায়। পরদিন সকালে বের হলে তাকে “ভ্যান চুরির অভিযোগে” আটক করে মিঠু ও ইসরাফিল। এরপর শুরু হয় নির্মম নির্যাতন।
তাকে মারধর করে মোটরসাইকেলে তুলে ডুমুরিয়ার একটি ঘেরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার ভ্রু, মাথার চুল এবং গোফ কেটে নেওয়া হয়। পরে তাকে শেকল দিয়ে খেজুর গাছে বেঁধে রাখা হয় শীতের রাতে।পরদিন মাকে খবর দিয়ে ২০০ টাকা দিয়ে বলা হয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু খুমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুভ মারা যায়। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় ২ ফেব্রুয়ারি শুভর চাচা খালিশপুর থানায় মামলা করেন। পরে এসআই আলতাফ হোসেন তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ৯ আগস্ট ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ এই রায় ঘোষণা করা হলো।
আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, জরিমানার অর্থ নিহত ইয়াছিনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করতে হবে। খালাসপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিচারক।