শিববাড়ি থেকে শহরজুড়ে প্রজ্বলিত ছিল স্মৃতি ও সম্ভাবনার আলো
গভীর শ্রদ্ধা ও সংহতির আবহে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) খুলনায় পালিত হলো জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫। সকাল থেকে নগরজুড়ে এক ব্যতিক্রমী আবহ—যেখানে ছিল স্মৃতিচারণ, ছিল প্রতিশ্রুতি, ছিল অশ্রু, আর ছিল অঙ্গীকার।
দিনের শুরু হয় খুলনার আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু শিববাড়ি মোড়ে অবস্থিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে’ পুষ্পস্তবক অর্পণ দিয়ে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন,জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা,আহত ‘জুলাই যোদ্ধারা’,বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার,খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার,জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম,রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা পরিষদ, সরকারি কর্মকর্তা, আনসার বাহিনী, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাধারণ মানুষ পুষ্পস্তবকের রঙ আর মোমবাতির আলোয় ঢেকে গিয়েছিল শিববাড়ির মোড়, যেখানে এক বছর আগে ছাত্র-জনতার কণ্ঠে গর্জে উঠেছিল “দফা এক, দাবি এক – বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক।”
বাদ জোহর মসজিদে শহীদদের জন্য দোয়া, পাশাপাশি মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়েও হয় বিশেষ প্রার্থনা। খুলনা যেন প্রার্থনার শহরে রূপ নেয় – ধর্ম, দল, মত নির্বিশেষে একাত্মতা প্রকাশ করেন সকলেই।
শহিদ হাদিস পার্ক, ময়লাপোতা মোড়, গল্লামারী,খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা, রূপসা মোড়এবং আরও অনেক স্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। দর্শনার্থীদের চোখেমুখে ছিল বিস্ময়, আবেগ, এবং কিছুটা গর্ব।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ ,আলোচনা সভা ,পুরস্কার বিতরণ ,দোয়া মাহফিল ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ফিরোজ সরকার। তিনি বলেন,“জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি আন্দোলন ছিল না, এটি ছিল এক জাতিগত পুনর্জাগরণ। আজকের প্রজন্ম সেই চেতনাকে ধারণ করলেই আমরা এগিয়ে যাব।”
সচিব শরীফ আসিফ রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা, প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খানসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মাত্র এক বছর আগে খুলনা যেই দিনগুলোতে কাঁপছিল, আজ সেগুলো গৌরবময় স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। যে জায়গায় আগুন জ্বলেছিল, আজ সেখানে আলো জ্বলছে। যে কণ্ঠ চিৎকার করেছিল প্রতিবাদে, আজ সেই কণ্ঠে সংকল্পের গান।