/ খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫

খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫

স্টাফ রিপোর্টার: খুলনায় একদিনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ জন নিহত হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং ডুমুরিয়ায় পৃথক দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। অকাল মৃত্যুতে নিহতদের পরিবারে শোকের মাতম চলছে। খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কটির বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি জানান, ডুমুরিয়ায় ইজিবাইক-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইক চালকসহ ৪ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছে। সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে ডুমুরিয়া উপজেলার জিলেরডাঙ্গা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হতাহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও ডুমুরিয়া হাসপাতালে প্রেরণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চুকনগরগামী একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ন-১১-৪৬৬৪) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের জিলেরডাঙ্গা নামক স্থানে খুলনাগামী যাত্রীবাহী একটি ইজিবাইককে চাপা দেয়। এসময়ে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইক যাত্রী ডুমুরিয়ার উত্তর কালিকাপুর গ্রামের রিনা খাতুন (৩৬) ও বাগদাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ রুস্তম আলী খান (৬৫) নিহত হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ইজিবাইক চালক ডুমুরিয়ার খরসন্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ জাহিদুর মোড়ল (২৫) মারা যায়।

ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা এবং সিনিয়র ফায়ার ফাইটার সুবোধ মন্ডল জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় ইজিবাইক ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ২ জন এবং খুলনায় নেওয়ার পথে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ট্রাক ও ভেঙে যাওয়া ইজিবাইকটি জব্দ করেছে।
এদিকে, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কটির বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে কৈয়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশায় যানবাহন চলাচল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে উঠে গেছে বিটুমিন, তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। অনেক জায়গায় সড়ক দেবে গিয়ে ঢেউয়ের মতো হয়েছে। চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কিছু স্থানে ইট বিছিয়ে সাময়িক ব্যবস্থা নিয়েছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু সেটিও ক্ষণস্থায়ী।

সড়ক বিভাগের সূত্র মতে, খুলনা-সাতক্ষীরার দূড়ত্ব ৬৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে খুলনা অংশ পড়েছে ৩৩ কিলোমিটার। যেটি খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়ার আঠারো মাইল পর্যন্ত।
সওজ’র তথ্যানুযায়ী, মহাসড়কটির প্রশস্তকরণ ও পুনর্র্নিমাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ’র খুলনা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত বিগত সাত মাসে খুলনা মহানগরীসহ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩০ জন এবং আহত হন ৩১জন। সঠিক পরিসংখ্যান না দিতে পারলেও এর অধিকাংশ দুর্ঘটনাই খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের খুলনা অংশে হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানাধীন নুরনগর বাংলাদেশ বেতারের সামনে সোমবার সন্ধ্যায় ট্রাকের ধাক্কায় এক রিক্সা চালকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করেছে স্থানীয় জনগণ। মৃত রিক্সা চালক হলেন, খুলনা সদর থানাধীন দক্ষিণ টুটপাড়া মহিরবাড়ি ছোটখালপাড় এলাকার বাসিন্দা কুরমান আলী গাজীর ছেলে মনিরুল ইসলাম গাজী।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল হাই জানান, প্রথমে একটি সিএনজি রিক্সাটিকে ধাক্কা দেয়। রিক্সা থেকে পড়ে যাওয়া চালকের উপর পেছন থেকে আসা সার বোঝাই ট্রাক চলে যায়।

স্থানীয়রা ট্রাকটি আটকাতে পারলেও চালক পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে নিহতের লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।