মেয়াদ বাড়ছে এক বছর

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে খুলনার উন্নয়ন কর্মকান্ডেও। নগরীর শামসুর রহমান রোডে নির্মাণাধীন খুলনা শহরে এডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পেও পড়েছে এর প্রভাব। এজন্য নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হচ্ছে না প্রকল্পের কাজ। বাড়াতে হচ্ছে আরও এক বছরের সময়। তবে নান্দনিক এ ভবনটি নির্মাণ হলে খুলনা শহরের চিত্র অনেকটা পাল্টে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পটি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় বাস্তবায়ন করছে। যার মোট প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি টাকা। তবে দু’টি বেইজমেন্টসহ ১৫ তলা বিশিষ্ট এ ভবনটি নির্মাণের জন্য চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। চলতি বছরের ২০ অক্টোবরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রভাবে কিছুটা বিঘœ ঘটছে উল্লেখ করে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো: ইসমাইল হোসেন এনডিসি বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আবু সায়েদ মো: মনজুর আলম বলেন, ইতোমধ্যে দু’টি বেইজমেন্টসহ পাঁচতলার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ভবনটির পরিচিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, বেইজমেন্টে ৭৫টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। হোটেল সেকশনে ৬৬টি বেডরুম থাকবে। যাতে থাকবে ১১২জনের ধারণ ক্ষমতা। কনভেনশন/মাল্টিপারপাস হল থাকবে একটি। যেখানে ৪৫০জনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ৩শ’ লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি সেমিনার হল, ১২০জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সেমিনার গ্যালারি, ৪শ’ লোকের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন চারটি লেকচার রুম, ৬০জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি কম্পিউটার ল্যাব, একটি লাইব্রেরি, একটি সুইমিং পুল, ২শ’ লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি রেস্টুরেন্ট থাকবে। এছাড়া ৭৮জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি নামাজের স্থান, একটি ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, একটি এক্সিবিশন স্পেস, একটি জিমনেশিয়া, একটি ইনডোর গেম, একটি ক্যাফে এন্ড পেনট্রিসহ থাকবে অভ্যন্তরীন রাস্তাও।
প্রকল্পটি যেহেতু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সরাসরি বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় বাস্তবায়ন করছে, সেহেতু ভবন নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের প্রেষণে এনে কাজটি তদারকি করা হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবু সায়েদ মো: মনজুর আলমকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে পদায়ন করা ছাড়াও খুলনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এ, এস, এম তারিকুল হাসান খানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেষণে পদায়নের মাধ্যমে এ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
ঢাকার ন্যানশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি: এন্ড পার্টনার ইন চার্জ অফ জয়েন্ট ভেঞ্চার জে,কে,বিএন্ড কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি সম্পন্ন করছে। বাস্তবায়নকারী সংস্থার সূত্রটি বলছে, ভবনটি নগরীর ৬২ নম্বর শামসুর রহমান রোডে ৬০ শতক জমির ওপর তৈরি হচ্ছে। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে(একনেক) অনুমোদিত হয়। যার প্রশাসনিক অনুমোদন হয় ওই বছরেরই ৪ ফেব্রুয়ারি এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ঢাকার বাস্তুকল্প আর্কিটেক্টস লিমিটেড’র সাথে চুক্তি হয় ১৮ এপ্রিল। একই বছরের ২৭ নভেম্বর দরপত্র আহবান এবং সরকারের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ক্রয় বিভাগে অনুমোদন হয় ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ। এরপর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল ঠিকাদারের সাথে চুক্তির মধ্যদিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শুরুর এক বছরের মাথায়ই সারাবিশে^র ন্যায় খুলনায়ও করোনা মহামারি শুরু হলে কাজে কিছুটা বিঘœ ঘটে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। করোনার প্রভাব না থাকলে চলতি মাসের(জুন) মধ্যে সাত তলা ভবন সম্পন্ন হয়ে অভ্যন্তরীণ নকশার কাজ শুরু হয়ে যেতো। কিন্তু হয়েছে কেবল পাঁচ তলা।