করোনা পরিস্থিতি

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৪৯ জনের। এর আগে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে ৩০ জনের মৃত্যু এবং ৩৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। গতকাল শনিবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। বাকিদের মধ্যে খুলনায় আটজন, যশোরে ছয়জন এবং নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৮৫ হাজার ৭৮৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ১২৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৯ হাজার ৯৭৩ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেলাভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৫ জনের। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২২ হাজার ১৯০ জনের। মারা গেছেন ৫৫৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৬৪ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৪৮৩ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৬১৬ জন।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১৯৬ জনের এবং মারা গেছেন ৮২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৯৬৮ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৬১৫ জন। মোট মারা গেছেন ৩০৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৩৯৮ জন।
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৫০ জনের। মোট মারা গেছেন ৮৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭০৯ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ জনের শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৭১০ জনের। মোট মারা গেছেন ৫৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৫০ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮২৬ জনের। মোট মারা গেছেন ১৮০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৪৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬৭ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ৯৩৮ জন। মোট মারা গেছে ৪৮০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৫৩ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১২ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫৯১ জনের। মোট মারা গেছে ১৪৯ জন এবং সুস্থ হয়েছে ৩ হাজার ৩৮৭ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৩ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩৮৫ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৮৫ জন।
তিন হাসপাতালে আটজনের মৃত্যু ঃ খুলনার তিনটি হাসপাতালে গতকাল সকাল পর্যন্ত করোনায় সর্বমোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ছয়জন, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে একজন এবং গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। তবে জেনারেল হাসপাতাল ও সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় কোন মৃত্যু হয়নি।
খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত যে ছয়জনের মৃত্যু হয় তারা হলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মোর্শেদা(৬০), যশোরের কেশবপুরের রেখা রানী ঘোষ(৬৫), খুলনার রূপসার সবুরন্নেছা(৭২), বাগেরহাটের মোল্লাহাটের ঝর্ণা(৪৫), বাগেরহাটের ফকিরহাটের সাবিনা(৩৬) ও রামপালের এনামুল হাসান(৪৭)।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত সেখানে একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম আফরোজা বেগম(৬০)। তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন বসুপাড়া মেইন রোডের বাসিন্দা।
এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: গাজী মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত সেখানের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়। তার নাম জালাল উদ্দিন(৬৬)। তিনি নগরী দৌলতপুর থানা এলাকার বাসিন্দা।
খুমেক ল্যাবে ৯২ শনাক্ত ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল শনিবার ৩৭৫টি নমুনা পরীক্ষার পর ৯২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। খুমেক’র উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ এ তথ্য জানান। তবে শনাক্ত হওয়া ৯২জনের ৯১জনই খুলনার। বাকী একজন পিরোজপুরের বাসিন্দা।