খুলনা নগরীর বড় মির্জাপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) গভীর রাতে একটি ছাতা তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকায় অবস্থিত ‘রহমান ছাতা কোম্পানি’ নামে একটি ছাতা উৎপাদনকারী বহুতল কারখানার গোডাউনে প্রথমে আগুন লাগে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ধোঁয়া ও আগুনের লেলিহান শিখা বের হতে দেখেন এলাকাবাসী। মুহূর্তেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কারখানার অন্যান্য তলায়। কারখানার বিভিন্ন তলায় তৈরি ছাতা, প্লাস্টিকের কাঁচামাল ও প্যাকিং সামগ্রী থাকায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের খুলনা সদর দপ্তরের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা শুরু করে। পরে খুলনার দৌলতপুর, সোনাডাঙ্গা, এবং রূপসা থেকে আরও পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যোগ দেয়। মোট ৮টি ইউনিট প্রায় ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
খুলনা বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক মো. মতিউর রহমান জানান।”ভবনের বিভিন্ন গেটে তালা লাগানো ছিল, যার কারণে আমাদের কর্মীদের প্রবেশ করতে বিলম্ব হয়। ভবনটি জনবহুল এলাকায় হওয়ায় আশপাশের মানুষদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুনের উৎস নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কারখানাটিতে বিপুল পরিমাণ দাহ্য পণ্য মজুদ ছিল, যার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে, তখন আগুনের উৎস ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র জানা যাবে।
আগুন লাগার সময় কারখানায় কোনো শ্রমিক ছিলেন কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা নিখোঁজের খবর পাওয়া যায়নি।
কারখানার আশপাশে থাকা কয়েকটি আবাসিক ভবন ও দোকানপাটের লোকজনকে রাতেই সরিয়ে নেওয়া হয়।
বড় মির্জাপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগুন লাগার সময় এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যে মনে হচ্ছিল পুরো এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কারখানার ভেতরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল ছিল। আগুন নেভানোর প্রাথমিক কোনও ব্যবস্থা ছিল না বললেই চলে।