#কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫টাকা

রঞ্জু আহমদঃ খুলনার বাজারে ফের বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ২ টাকা অন্যদিকে খুচরা বাজারে বেড়েছে ৪ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছে-এলসির চাল আমদানী বন্ধ থাকা এবং মিলারদের হাতে বাজার জিম্মি থাকায় এ দাম বৃদ্ধি। আমন ধান ওঠার আগে আর দাম কমছে না বলেই মত দিয়েছেন তারা।
জেলা খাদ্য অফিসের তথ্য মতে, গত বুধবার মহানগরীর বাজারগুলোতে মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা, মাঝারি চাল ৪৮-৫০ টাকা, চিকন চাল ৫৬-৫৮ টাকা, উপজেলা পর্যায়ে মোটা চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা, মাঝারি চাল ৪৬-৪৮ টাকা এবং চিকন চাল ৫৪-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। চালের দাম ২৫ কেজির বস্তায় ১০০ টাকা এবং ৫০ কেজির বস্তায় ২০০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি কেজি স্বর্ণা মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বালাম ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা, বাসমতি ৬৫ থেকে ৭২ টাকা। ইরি আতপ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, ২৮ আতপ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৬ থেকে ৭০ টাকা, স্থানীয় চাল ভাইটাল ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ গেল সপ্তাহেও এসব চালের দাম শ্রেণিভেদে ৩ থেকে ৫ টাকা হারে কম ছিল।
ব্যবসায়ীদের সূত্র বলছে, চালের যে বর্ধিত মূল্য তা এখনকার নয়। বোরো ওঠার আগে যে দাম বেড়েছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই দামই রয়েছে। শ্রাবন-ভাদ্র ও আশ্বিন এই তিন মাস দাম একটু বাড়ে। তবে এর আগে যে দাম বেড়েছিল সেটা আর কমাতে পারেনি সরকার। এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে এক দফা দাম বাড়ে।
খুলনার টুটপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোঃ শাহজাহান বলেন, একবছর আগেও আমরা স্থানীয় জাতের ভাইটাল চাল বিক্রি করতাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। সেই চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। অন্যান্য চালের হিসেবও একই। তাহলে এই দাম হঠাৎ করে বাড়েনি। দীর্ঘদিন ধরেই বেড়ে চলেছে।
বড় বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মেসার্স হালিম বাণিজ্য ভা-ারের মালিক আব্দুল হালিম বলেন, বছরের এই সময়ে একটু চালের দাম বেড়েই থাকে। দেশে এলসির চাল আসছে না। সরকারের মজুদেও ঘাটতি রয়েছে। মিল মালিকরা এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে। বছরের শুরুতে যখন এসব মিল মালিকরা ধান মজুদ করেছিল তখন সরকার কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে এসময় তো চালের দাম বাড়বেই।
ফরিদ ব্রাদার্সের ম্যানেজার গোবিন্দ সাহা বলেন, চালের দাম বাড়ছে। মূলত মিল মালিকরাই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনে বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের ওএমএস এবং ১০টাকা কেজি দরের চাল প্রদান বন্ধ রয়েছে। নি¤œ আয়ের মানুষ খোলা বাজারের ওপর নির্ভরশীল। যে কারনে মিলররাও তাদের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চালু রেখেছে।
সরকারি গুদামে চালের মজুদের বিষয়ে খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন, মূল্য স্থীতিশীল রাখা ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ নি¤œ আয়ের মানুষদের খাদ্য সহায়তার জন্য খুলনার ৬৮টি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি হবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে। জন প্রতি প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।
জেলার দুটি কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদাম ও উপজেলা পর্যায়ে ৮টি গুদামে ৫৪ হাজার ৬৮০ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। এ কর্মসূচি চালু হলে বাজারের এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।