খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি ঃ খুলনা বিভাগের একমাত্র মীরেরডাঙ্গা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে শিশু রোগীদের ক্যানোলা পারাতে পারেন না এমন অভিযোগও রোগিদের। আবার কোন কোন রোগীকে স্যালাইন পুশ করছে ক্লিনার। বিশেষায়িত এই হাসাপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ডায়রিয়ার শিশু রোগিদের সংশ্লিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শিশু রোগিদেরকে ফেরৎ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোগিদেরকে সরকারি ওষুধ না দেওয়ারও অভিযোগ হাসপাতাটির কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে সেবা নিতে আসা রোগি ও তাদের স্বজনদের সাথে হাসপতালের কর্তব্যরত নার্সদের অসাদাচরণের। এছাড়াও হাসপাতালটির নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও গবাদি পশু গরু-ছাগলের বিচরণ ভূমিতে পরিনত হয়েছে। খুলনা বিভাগের একমাত্র বিশেষায়িত মীরেরডাঙ্গা সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালটি দীর্ঘদিন যাবত অবহেলা আর অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে নিজেই সংক্রমায়িত হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নানা জটিলতার মধ্যে চরম ভাবে দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা, নার্সদের অসাদাচরণ, চরম নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, বরাদ্দকৃত ঔষধ না দেওয়া, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অনিয়মের।
একাধিক রোগির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাসপাতালটিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেবা প্রত্যাশিদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
যশোর থেকে আসা শান্তা ইসলাম নামের এক রোগী জানান, তিনি তার খালুকে সেখানে ভর্তি করেছেন। কিন্তু সরকারি ওষুধ না দিয়ে বাইরের ফার্মেসী থেকে কিনে আনতে বলা হয়। তিনি জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত খাবার বা ওষুধ মিলছে না ওই হাসপাতালে। সেখানে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সবই ভিন্ন পথে বাইরের দোকানে চলে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
হাসপাতালের ভিতরে প্রবেশ করে দেখা যায় একজন রোগিকে স্যালাইন পুশ করছেন মিলন দাস নামের এক ব্যাক্তি। পরে তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি হাসপাতালের ষ্টাফ’। তার পদবী জানতে চাইলে তিনি জানান ‘ক্লিনার’। এ সময় অফিস কক্ষের মধ্যে দু’জন নার্সকে বসে গল্প করতে দেখা যায়।
হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালটির নানাবিধ সমস্যার মধ্যে আবাসিক এবং জনবল সংকট প্রকট। যা উর্ধতন কর্তপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালটির সীমানা দেয়াল ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং সিকিউরিটি গার্ড না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি অরক্ষিতভাবে আছে। সন্ধ্যার পর এখানে বহিরাগতদের আড্ডা চলে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ওষুধের বিষয়ে তিনি বলেন চাহিদার চেয়ে প্রাপ্তি কম। যা আসে তা সব রোগিকে দেওয়া হয়। শিশুদের ক্যানোলা দেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নার্স সেখানে নেই বলেও তিনি জানান। তিনি হাসপাতালে জরুরী ভিত্তিতে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।