কাল থেকে শুরু ভ্যাকসিনের কার্যক্রম

প্রথম পর্যায়ে দুই ডোজ করে ভ্যাকসিন

পাবেন জেলার ৮৪ হাজার মানুষ

প্রথম ভ্যাকসিন নিবেন কেসিসি মেয়র

এ এইচ হিমালয় ঃ করোনা ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে খুলনার স্বাস্থ্য বিভাগ। ভ্যাকসিন পরবর্তী জটিলতা এড়াতে খুলনা মহানগরীর ১৩টি হাসপাতাল এবং জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কেন্দ্রে টিকা প্রদানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬টি টিমকে। প্রথম পর্যায়ে আগামী দুই সপ্তাহে খুলনার ৮৪ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর তাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হবে। আজ পর্যন্ত যারা অনলাইনে নিবন্ধন করবেন তারাই প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন পাবেন। তবে শুক্রবার পর্যন্ত খুলনা থেকে কতো জন ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন করেছেন জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে আগামীকাল রোববার সকাল ১০টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। প্রথম ভ্যাকসিন নিবেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। একই সময়ে অন্যান্য উপজেলা ও টিকা কেন্দ্রে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। বর্তমানে খুলনায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ডাবল ডোজ করোনা ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে।
খুলনার সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, খুলনা মহানগরীর ১৩টি কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় ২৯টি টিম নিয়োজিত থাকবে। জেলার ৯টি উপজেলায় প্রতিটি কেন্দ্রে ৩টি করে ২৭টিম কাজ করবে। প্রতিটি টিমে দুই জন ভ্যাকসিনেটর এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। ইতোমধ্যে সবাইকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া টিকা পরবর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য সির্ভিল সার্জনের দপ্তরে দুটি এবং ৯টি উপজেলায় ৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সই হচ্ছে ৯টি টিকা কেন্দ্র। এছাড়া খুলনা মহানগরী এলাকায় ১৩টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতাল, খুলনা পুলিশ হাসপাতাল, জেনারেল (সদর) হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খালিশপুর লাল হাসপাতাল, খালিশপুর ১২নং ওয়ার্ডের নগর মাতৃসদন, টুটপাড়া তালতলা মাতৃসদন হাসপাতাল, কাস্টমঘাটস্থ আমিরা বানু নগর মাতৃসদন, বাইতিপাড়া নগর মাতৃসদন, ফুলবাড়িগেট বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও বাংলাদেশ নেভি উপশম হাসপাতাল।
খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাইদুল ইসলাম পূর্বাঞ্চলকে বলেন, টিকা নিয়ে মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এজন্য হাসপাতালেই টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। টিকা কেন্দ্রগুলোতে ৩টি ধাপ থাকবে। প্রথমে নিবন্ধিত ব্যক্তি টিকা কেন্দ্রের অভ্যর্থনা কক্ষে অবস্থান করবেন। এরপর সিরিয়াল অনুযায়ী টিকাদান কক্ষে গিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন। এরপর তৃতীয় কক্ষে গিয়ে ৩০ মিনিট বিশ্রাম নিবেন। সেখানে শয্যা ও চেয়ার দুটোই থাকবে। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন। টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার আশংকা খুবই কম। তারপরও সেখানে চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন।
সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ পূর্বাঞ্চলকে বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে দুই শুক্রবার বাদ দিয়ে মোট ১২ দিন ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম চলবে। খুলনায় বর্তমানে ১ লাখ ৬৮ হাজার ডাবল ডোজ টিকা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৮৪ হাজার নিবন্ধিত ব্যক্তিকে টিকা দেওয়া যাবে। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পরে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এর মধ্যে যদি আরও বেশি মানুষ নিবন্ধন করেন তাদেরও টিকা দেওয়া হবে।
এদিকে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সফল করতে নগরী ও জেলায় চলছে ব্যাপক-প্রচারণা। মাইকিংয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগানো হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবন্ধনে উদ্বুদ্ধ ও সহযোহিতা করছেন।