স্টাফ রিপোর্টার ঃ কঠোরভাবেই পালিত হয়েছে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন। খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এমন চিত্রই মিলেছে। পুলিশসহ প্রশাসনও যেমন ছিল কঠোর অবস্থানে তেমনি সাধারণ মানুষও গতকাল ছিল অতীতের যে কোন দিনের চেয়ে অনেকটা সচেতন। তবে এর মধ্যেও অনেকে লকডাউন উপেক্ষা করে বাইরে বের হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের প্রথম দিন গতকাল মঙ্গলবার সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন ছিল লক্ষ্যণীয়। দিনের শুরুতে রাস্তা-ঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি একেবারেই কম ছিলো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বাড়ে। তবে তাদের মধ্যে লকডাউন পরিস্থিতি দেখার আগ্রহটাই ছিলো মূখ্য। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার থেকে সপ্তাহব্যাপী এ লকডাউন ঘোষনা করে।
নগরীর শিববাড়ি, জোড়াগেট, ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস, ময়লাপোতা, শান্তিধাম, সাতরাস্তা, রয়েল মোড়, টুটপাড়া মোড়, রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে নির্দেশ পালনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে পুলিশ বিভাগের সদস্যদের। একই সাথে রাস্তায় ছিলো ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে নগরীর বিভিন্ন অলি-গলির মুখে এলাকার স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্যণীয়। মহানগরীতে প্রবেশের পয়েন্টসহ অধিকাংশ রাস্তাঘাট বাঁশ-কাঠ দিয়ে ব্যরিকেড দেয়া হয়েছে। নগরীতে পায়ে চালিত রিক্সা চলতে দেখা গেলেও চলতে দেয়া হয়নি ইজিবাইক-মাহেন্দ্র। তবে জেলখানা ও রূপসা ঘাটের মাঝিদের লকডাউন মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা গেছে। দুরপাল্লার কোন বাস খুলনা থেকে ছেড়ে যায়নি। নগরীতে কিছু ফলের দোকান খোলা থাকলেও অন্য কোন দোকানপাট ছিল বন্ধ। তবে কিছু দোকানের সামনে মালিক ও কর্মচারীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম জানান, লকডাউন চলাকালে অযাচিত ঘোরাফেরা ও মাস্ক না থাকায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ১৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, খুলনায় সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সচেতন করতে সমগ্র জেলায় মাইকিং ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন দু’দিন আগে থেকে চালানো হয়েছে। খুলনার সঙ্গে সাতক্ষীরার সংযোগ চুকনগর, যশোরের সংযোগ যুগনীপাশা ও বাগেরহাটের সঙ্গে সংযোগ কুদিরবটতলায় নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি সেবার কাজে নিয়োজিত পরিবহন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
এসপি জানান, মোট জেলায় ২৬টি চেক পোস্ট বসানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের যত দায়িত্ব আছে, সব বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে জেলার ৯ থানাকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই মাঠে কাজ করছে পুলিশ। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করার সবই করা হচ্ছে। যা লকডাউনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, খুলনা ছাড়াও দেশের অন্য সাতটি জেলায়ও পালিত হয় লকডাউন।