গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য
সৃষ্টি হবে সেতুবন্ধন

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায় খুলনায় ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হতে যাচ্ছে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স। সাত তলা বিশিষ্ট এ ভবনটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে(একনেক) অনুমোদিত হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা বিভাগের এনইসি-একনেক ও সমন্বয় অনুবিভাগের একনেক শাখা-১এর উপপ্রধান নিশাত জাহান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এটি উল্লেখ করা হয়েছে। খুলনাসহ দেশের ২৬টি জেলায় জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ(১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় এ ভবন নির্মাণ হচ্ছে বলেও পত্রে উল্লেখ করা হয়। ২৬টি ভবনের জন্য মোট ব্যয় হবে এক হাজার ১০৩ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা বিভাগের পত্রে উল্লেখ করা হয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতায় গণযোগাযোগ অধিদপ্তর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। সম্পূর্ণ জিওবি’র অর্থে ভবনটি নির্মাণ হচ্ছে। গত ৫ জানুয়ারির একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। চলতি বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে এখনও এজন্য জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সম্পন্ন হয়নি। তথ্য কমপ্লেক্সের প্রতিটি ভবনের জন্য জমির প্রয়োজন হবে এক বিঘা(৩৩ শতক)।
খুলনায় ভবনটির জন্য খুলনা বিশ^বিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকায় জমি দেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদ। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই তথ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে। এ ভবনে আধুনিক সিনেপ্লেক্সসহ বিভাগীয় ও আঞ্চলিক তথ্য অফিসের পৃথক অফিস থাকবে। এছাড়া থাকবে হলরুম এবং মিডিয়া কর্মীদের জন্য পৃথক স্পেস। তথ্য কমপ্লেক্সটি গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সেতুবন্ধন সৃষ্টি করবে বলেও তিনি আশা করছেন।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(এলএ) মো: মারুফুল আলম বলেন, পরিকল্পনা বিভাগের এমন প্রকল্পের বিষয়টি তিনি এখনও অবহিত নন। তবে নির্দেশনা পেলে দ্রুতই জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি সম্পন্ন করে তথ্য কমপ্লেক্সের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
খুলনা জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক গাজী জাকির হোসেন বলেন, খুলনায় তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান চন্দ্র কর্মকারকে এ প্রকল্পের পিডি করা হয়েছে।
ওই প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান বলেন, খুলনায় ভবনটি নির্মাণের জন্য জিরো পয়েন্ট এলাকায় যে এক বিঘা জমি দেখা হয়েছে সেটি এখনও অধিগ্রহণ হয়নি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণ করার পরই ভবন নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হবে। এ ভবনে অত্যাধুনিক সিনেপ্লেক্স, তথ্য অফিস, ডিজিটাল ল্যাবসহ বিভিন্ন স্থাপনা থাকবে।
খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ সাংবাদিকতার মানোন্নয়নের জন্য অবশ্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে জায়গাটি শহরের যত কাছে হবে ততোই ভালো। কেননা অনেক দূরে হলে সাংবাদিকদের যাতায়াতে সময় নষ্ট হবে। যেহেতু সেখানে তথ্য অফিস থাকবে সেহেতু সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগের বিষয়টি মাথায় রেখেই স্থান নির্বাচন করা উচিত বলেও তিনি মনে করেন।
একইসাথে ভবনের নকশা হতে হবে গণমাধ্যম বান্ধব। বিশেষ করে সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তি থেকে শুরু করে মিডিয়া কর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা যাতে থাকে সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জন্য পৃথক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হলেও সাংবাদিকতার মানোন্নয়ন হবে বলেও তিনি মনে করেন। বিশেষ করে ওই ভবনে যাতে সাংবাদিকদের আবাসিক প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকে সেটিও বিবেচনায় রাখা যেতে পারে। ভবন নির্মানের আগেই এ বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত পক্ষে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ ও মানোন্নয়ন হলে তথাকথিত হলুদ সাংবাদিকতা ও অপসাংবাদিকতা দূর হবে। এজন্য খুলনায় তথ্য কমপ্লেক্সের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।