স্টাফ রিপোর্টার ঃ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল (রবিবার) সকালে সর্বপ্রথম নিজে টিকা গ্রহণের মাধ্যমে খুলনায় করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খুলনা জেলা ও মহানগরীতে মোট ৮৬৩ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৪৪ জন ও নারী ২১৯ জন। খুলনা মহানগরী এলাকায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৩৯৯ জন। অন্যদিকে জেলার ৯টি উপজেলায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৪৬৪ জন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম দিনে আরও টিকা নিয়েছেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির, খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোঃ আব্দুল আহাদ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ, খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু এবং খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, কাউন্সিলর শেখ মোশারফ হোসেন ও শেখ হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সূত্রটি জানায়, প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে একশত ৫০জন হিসাবে দিনে ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দিন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি ছিলো স্বাস্থ্য বিভাগের। কিন্তু ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন মাত্র ৮৬৩ জন।
খুলনা জেলায় করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে মহানগরে ১৩টি কেন্দ্রের জন্য ২৯টি টিম এবং প্রত্যেক উপজেলায় তিনটি করে মোট ২৭টি টিম কাজ করছে। প্রতিটি টিমে দুই জন করে টিকাদানকারী এবং চার জন করে ভলান্টিয়ার কাজ করছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে গড়ে একশত ৫০জন হিসাবে দিনে ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে।
খুলনায় প্রাথমিক পর্যায়ে মোট এক লাখ ৬৮ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, যার মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪৮ হাজার ৯৬০ ডোজ। খুলনা মহানগরে যে ১৩টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে তা হলো: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিজিবি হাসপাতাল, খুলনা পুলিশ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন কার্যালয়, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খালিশপুর লাল হাসপাতাল, খালিশপুর লাল হাসপাতাল, নগর মাতৃসদন ১২ নম্বর ওয়ার্ড খালিশপুর, তালতলা মাতৃনদন হাসপাতাল ৩০ নম্বর ওয়ার্ড, আমিরা বানু নগর মাতৃসদন ২২ নম্বর ওয়ার্ড নগর মাতৃসদন বাইতিপাড়া, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ফুলবাড়ীগেট এবং উপশম হাসপাতাল, বাংলাদেশ নেভি খুলনা। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিক পনেরটি ক্যাটাগরীর লোককে এই টিকা দেওয়া হবে। এজন্য অগ্রাধিকার তালিকাভূক্ত সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমেwww.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইট বা গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘সুরক্ষা অ্যাপস’ ডাউনলাডের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। তবে ৫৫ বছরের উর্ধ্বে সকল নাগরিক নিবন্ধন করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকার প্রয়োজন নেই। ৫৫ বছরের নি¤েœ যারা অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র দ্বারা নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছেন বা হচ্ছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে linedirector@mis.dghs.gov.bd মেইলে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এর তালিকা প্রেরণ করতে হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন এনডিসি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মোঃ আব্দুল আহাদ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, সিভিল সার্জন ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ, মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ, কেসিসি’র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কেএম আব্দুল্লাহ, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা বিশ^বিদ্যালয় থেকে প্রথম করোনাভাইরাসের টিকা নিলেন বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন। গতকাল ৭ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) দুপুর ১টায় তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র এ টিকা নেন। টিকা নেওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম টিকা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি উৎসাহ বোধ করছি। ইতোমধ্যে টিকা গ্রহণের পর ৬ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে, কোন পাশর্^ প্রতিক্রিয়া অনুভব করছি না। আমি ভালো আছি।’