# বাংলা নববর্ষ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য ঃ সিটি মেয়র

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার খুলনায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে সকালে নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। খুলনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
শোভাযাত্রায় জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার,পুলিশ সুপার মোঃ মাহাবুব হাসান,বীর মুক্তিযোদ্ধা,সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সকলকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন,বাংলা নববর্ষ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য। এ উৎসব সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক। নতুন বছরের প্রথম দিনে অতীতের সকল গ্লানি ভুলে গিয়ে আমাদের সামনে এগুতে হবে।তিনি বলেন,অতীতের সকল গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সকলক্ষেত্রে আমাদের ঐক্যকে আরো সুসংহত করবে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে খুলনা শিশু একাডেমি শিশুদের নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করে। শিশু পরিবার (এতিমখানা) কর্তৃক ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জেলখানার কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রদর্শন করা হয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
জাতীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্য রেখে উপজেলাসমূহে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ-১৪২৯) উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষ্যে সকাল ৯টায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর থেকে শুরু করে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় মেইন গেট হয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভ থেকে হাদী চত্বরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় নানা রঙের ফেস্টুন, ঘোড়া, পেঁচা, দোয়েলসহ বর্ণিল সাজ ছিলো নজরকাড়া। শোভাযাত্রা শেষে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। এর সাথে বাঙালি জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত। বাঙালির চিরায়ত এই উৎসবটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উদযাপিত হয়। বাংলা নববর্ষের কর্মসূচির মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও প্রশংসিত। যা ইতোমধ্যে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। বিগত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে বাংলা নববর্ষ সেভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এই মহামারী কাটিয়ে আবারও যে উৎসবমুখরভাবে দিনটি পালন করা হচ্ছে এটা আমাদের জন্য আনন্দদায়ক।
তিনি আরও বলেন, বাংলা নববর্ষ অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে জাগ্রত করে। সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবে রূপদানে কাজ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। যার ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ যে মধ্যম আয়ের দেশের স্বপ্ন দেখছে, তা বাস্তবায়িত হবে। শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয় সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন উপাচার্য। শোভাযাত্রা শেষে তিনি বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত লাঠিখেলা, মোরগ লড়াই উপভোগ করেন।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধানবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ,আয়োজক কমিটির সভাপতি চারুকলা স্কুলের ডিন,কমিটির সদস্য-সচিব ছাত্র বিষয়ক পরিচালকসহ শিক্ষক,ছাত্র-ছাত্রী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন। এছাড়াও বাইরের প্রচুর সংখ্যক মানুষ সপরিবারে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন নববর্ষ উদযাপনে।
নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ঃ নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে বাংলা বর্ষবরণ-১৪২৯ এর অনুষ্ঠানমালা উদযাপিত হয়েছে। এ দিন সকালে একাডেমিক ভবন-১ থেকে বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন মিলনায়তনে বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ বজলার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস-চেয়ারম্যান এস. এম. কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ মোঃ ওবায়দুল্লাহ, পবিত্র কুমার সরকার। আলোচনায় অংশ নেন বিশ^বিদ্যালয়ের ট্রেজারার সুধীর কুমার পাল, সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর ড. মোঃ নওশের আলী মোড়ল, লিবারেল অব আর্টস এন্ড হিউম্যান সায়েন্স ফ্যাকাল্টির ডীন প্রফেসর ড. আবদুল্লা-হেল বাকী, রেজিস্ট্রার মুহম্মদ শরিফুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডঃ নাসিম আহমেদ, প্রক্টর শেখ মাহরুফুর রহমান, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) রবীন্দ্রনাথ দত্ত প্রমূখ। উপস্থিত ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টরবৃন্দ, শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর মোঃ আসাদুজ্জামান।-খবর ঃ বিজ্ঞপ্তির