খুলনা জেলা কারাগারে শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে বন্দিদের দুই প্রভাবশালী গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৪০ মিনিট স্থায়ী এ সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন বন্দি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কারারক্ষীরা।
কারা সূত্রে জানা গেছে, বিকেল পৌঁনে ৫টার দিকে কারাগারের অভ্যন্তরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুখ্যাত সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবু গ্রুপ এবং কালা লাভলু গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তা ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে রূপ নেয়। সংঘর্ষে অংশ নেয় দুই গ্রুপের প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন বন্দি। এতে রাব্বি চৌধুরী (গ্রেনেড বাবুর ভাই), হিরন, রুহান-পলাশ গ্রুপের পলাশ, কালা লাবলু, সৈকত ও মইদুলসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারারক্ষী জানান, বন্দিদের অনেকেই এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ তারা অমান্য করছে। দীর্ঘদিন কঠোর শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় নিয়ন্ত্রণহীনতা বাড়ছে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত কারাগারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে জেল সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধানের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক কারারক্ষী গিয়ে লাঠিচার্জের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান বলেন, দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। লাঠিচার্জের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছেন, তবে পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত।
এদিকে, সংঘর্ষ চলাকালে এক পর্যায়ে কিছু বন্দি কারারক্ষীদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে। পরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সংশ্লিষ্টদের পৃথক লকারে স্থানান্তর করা হয়, যাতে পুনরায় কোনো সংঘর্ষ না ঘটে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুই মাদক ব্যবসায়ী বন্দির মধ্যে প্রথমে ঝগড়া বাধে, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।