এ এইচ হিমালয় : খুলনার ভৈরব নদের স্কিড ঘাট কী পয়েন্ট (৫ নম্বর ঘাট) এলাকার প্রতিরক্ষা প্রাচীরে ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নদী পরবর্তী ৫০ ফুট এলাকা ডেবে গেছে। প্রতিদিন দুই বেলা জোয়ারের পানিতে ভাঙন আশপাশ এলাকায়ও ছড়িয়ে পড়ছে। এতে ঘাট অচল হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ঘাটের অন্য অংশের প্রতিরক্ষা প্রাচীর ভেঙ্গে প্রায় ৩০ ফুট এলাকা ধসে যায়। প্রায় একবছর পরে এর মেরামত কাজ শুরু হয়। ততোদিন ঘাটের প্রায় ১০০ ফুট এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ে। ওই অংশ মেরামত কাজ শেষ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে নতুন করে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। আপাতত ওই অংশ দিয়ে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, ষাটের দশকে নদী বন্দর এলাকায় এই স্কিড কী পয়েন্ট নির্মাণ করা হয়। নদীর তীরে শক্ত ঢালাই ও ভেতরে লোহার পাত দিয়ে ওই সময় গার্ডার নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে গার্ডারের পাশে কনক্রিটের ঢালাই দিয়ে সীমানা দেওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিলো। ২০১৮ সাল থেকে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। প্রথম পর্যায়ে মূল গার্ডারটি বেঁকে যায়। পরে কনক্রিটের দেওয়াল ভেঙ্গে মাটিও ডেবে যেতে থাকে।
ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটের ভেতরে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। মূল নিরাপত্তা গার্ডারটি বেঁকে নদীর ভেতরে চলে গেছে। এছাড়া কনক্রিটের নিরাপত্তা দেওয়াল ভেঙ্গে গেছে। দুই বেলা জোয়ারের পানিতে ওই অংশ ডুবে থাকায় প্রতিদিনই জায়গাটি একটু একটু করে ডেবে যাচ্ছে।
৫ নম্বর ঘাট হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক শিকদার বলেন, করোনাকালে ঘাটে একটু কাজ শুরু হয়েছে। এতে শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু ঘাটের গুরুত্বপূর্ণ অংশে ভাঙন দেখা দেওয়ায় মালামাল ওঠানামা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, দ্রুত এই ভাঙন মেরামত করা না হলে ভাদ্র-আশ্বিনের পানির চাপে পুরো ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
স্কীড ঘাট কী পয়েন্টের ইজারাদার চৌধুরী মিনহাজ-উজ জামান সজল পূর্বাঞ্চলকে বলেন, ষাটের দশকে তৈরি স্কিড ঘাট এ অঞ্চলের পণ্য আনা-নেওয়ার কেন্দ্র বিন্দু। প্রথমবার ঘাটে ভাঙন ধরার পর বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের জানানো হয় এবং স্থায়ীভাবে ঘাট মেরামতের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা শুধু ভাঙ্গা অংশটি মেরামত করে। এ অঞ্চলের ঘাটগুলো থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও সংস্কারের বিষয়ে সংস্থাটি বরাবরই উদাসীন।
তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগে নতুন করে ভাঙন দেখা দিলেও এখনও বিআইডব্লিউটিএর কেউ খোঁজ নেয়নি। দ্রুত ভাঙন ঠেকানো না গেলে এটি ছড়িয়ে পরার আশংকা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ খুলনার উপ-পরিচালক ও বন্দর কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি এখনও আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।