করোনা পরিস্থিতি

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা বিভাগে এক দিনে করোনাভাইরাসে আরও ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বিভাগে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬৮৯জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৮৮ জনের। এর আগের দিনও বিভাগে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা জেলায়। বাকিদের মধ্যে যশোরে ১০ জন, কুষ্টিয়ায় ৯ জন, ঝিনাইদহে ৫ জন, মেহেরপুর ও নড়াইলে ৩ জন করে, চুয়াডাঙ্গায় দুজন, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৭৮০ জন আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৬৮৯ জন। এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৮ হাজার ১১১ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জেলা ভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩২০ জনের। জেলায় এ পর্যন্ত জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৪৪৮ জনের আর মারা গেছেন ৪৪৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ১৩৩ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৯ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮৬০ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৬০ জন।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৯১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮৭ জন এবং মারা গেছেন ৭৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ২৮৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৩৬৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৭৯ জন। মোট মারা গেছেন ২৪০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৩৮৪ জন।
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৫ জনের। মোট মারা গেছেন ৭১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৬৭ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ২২৪ জনের। মোট মারা গেছেন ৪০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪২১ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১০৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫৮ জন। মোট মারা গেছেন ১৪৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৫৭৪ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ২৯১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ হাজার ৮৭২ জনের। মোট মারা গেছেন ৩৫৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৯৯০ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৩৬ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৮১৩ জন। মোট মারা গেছেন ১২৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৩৫ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৭২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৫৪ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৭৬৪ জন।
চার হাসপাতালে ১৪জনের মৃত্যু ঃ খুলনার চারটি হাসপাতালে বিগত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র জানান, সেখানে বিগত ২৪ ঘন্টায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এরা হলেন, নগরীর সোনাডাঙ্গার আফজাল হোসেন(৫০), দৌলতপুরের সামাদ(৭৫), ফুলবাড়িগেটের গাজি সামসুর রহমান(৮৪), এক নম্বর কাষ্টম ঘাটের সুমি(২২) এবং বাগেরহাটের সামছুন্নেছা(৪৭)।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালে বিগত ২৪ ঘন্টায় চার জনের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: কাজী আবু রাশেদ জানিয়েছেন। এরা হলেন, রূপসার আইচগাতীর কালাম সরদার(৭৮), সিংহের চরের তাসলিমা(৪৫), ডুমুরিয়ার সৈয়দ মুজিবুর রহমান(৮০) এবং চিত্ত রঞ্জন মন্ডল(৮০)।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিগত ২৪ ঘন্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আলমগীর মল্লিক(৬৫)। তিনি নগরীর মুজগুন্নি এলাকার বাসিন্দা।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: গাজী মিজানুর রহমান বলেন, বিগত ২৪ ঘন্টায় ওই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, বাগেরহাটের দশানীর মিসেস হোসনেয়ারা আলম(৭২), খুলনা সদরের দারোগাপাড়ার শেখ নজরুল ইসলাম(৬১), নতুন বাজারের মিসেস আলেয়া বেগম(৫০) এবং শিরোমনির শেখ নুরুল হক(৭৮)।
খুমেক ল্যাবে একদিনে ২০৬ শনাক্ত ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল মঙ্গলবার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষার পর ২০৬জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় বলে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ জানিয়েছেন। এর মধ্যে খুলনার ১৬৪জন, বাগেরহাটের ৩৬জন, যশোরের পাঁচজন এবং নড়াইলের একজন রয়েছেন। অবশ্য ৩৭৬টি নমুনার মধ্যে খুলনার নমুনার সংখ্যা ছিল ২৭৩টি। সে ক্ষেত্রে গতকাল পরীক্ষা হওয়া মোট নমুনার শনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ হলেও খুলনায় শনাক্তের হার ছিল ৬০ শতাংশ।