# প্রার্থী হয়েছেন মেয়র পদে ৫, কাউন্সিলর ১৩৬ ও সংরিক্ষত ৩৯ জন
# নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন আইনশৃংখলা বাহিনীর ৮ হাজার সদস্য
# ২৩০০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটর্রিং হবে ঢাকা থেকে

স্টাফ রিপোর্টার : প্রতীক্ষার পালা শেষ হয়েছে। আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে খুলনা সিটি করপোরেশনের কাক্সিক্ষত নির্বাচন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। গতকালই খুলনা বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স থেকে ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হয়। দিনভর প্র্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ-আনসার সদস্যরা এসব সরঞ্জাম কেন্দ্রে নিয়ে যান। বিকালের মধ্যে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যান ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রাতে ভোটকেন্দ্রেই অবস্থান করেন।
এদিকে নির্বিঘেœ নির্বাচন সম্পন্ন করতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। নির্বাচনে পুলিশ, আমর্ড পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, নৌ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
এ বছর খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৫ জন। তারা হলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, কেসিসির সাধারণ ২৯টি ওয়ার্ডে ১৩৪ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ১৩নং ওয়ার্ডে এস এম খুরশিদ আহমেদ টোনা এবং ২৪নং ওয়ার্ডে জেড এ মাহমুদ ডন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৮ জন। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রে তারা ভোট প্রদান করবেন। ভোটগ্রহণ কার্যক্রম সহজ করতে এসব কেন্দ্রে এক হাজার ৭৩২টি বুথ স্থাপন করা হচ্ছে। ভোট গ্রহণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২৮৯জন প্রিজাইডিং অফিসার, এক হাজার ৭৩২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৩ হাজার ৪৬৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
॥ কড়া নিরাপত্তা গ্রহণ ॥
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, নগরীর ২৮৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৬১টি গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রসহ নগরীর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবে ৪ হাজার ৫২০ জন পুলিশ ও ৩ হাজার ৪৬৮ জন আনসার সদস্য।
র‌্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক লে. কর্নেল ফিরোজ কবীর দুপুর ১২টায় জিলা স্কুলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ১৬টি টিমে তাদের ১২৮ জন সদস্য নগরীতে টহল দেবে। নগরীর প্রবেশ পথগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ভোটকেন্দ্র ও আশেপাশের সড়কের নিরাপত্তায় র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা কাজ করছে। নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের গুজব-অপপ্রচার প্রতিরোধে মনিটরিং সেল গঠন করা রয়েছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, নির্বাচনের দিন ৪৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। শনিবার থেকে নগরীতে টহল দিচ্ছে ১১ প্লাটুন বিজিবির ২২০ জন সদস্য।
নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, নদীপথে টহল দেবে নৌ পুলিশ। এবারের নির্বাচনে দুটি বেসরকারি সংস্থার ২০ জন পর্যবেক্ষক ও নির্বাচন কমিশনের ১০ জন পর্যবেক্ষক থাকবেন। এবারের নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি জানান, সব কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ হবে ইভিএম মেশিনে। এজন্য ব্যবহার করা হবে প্রায় ৩ হাজার ইভিএম মেশিন। প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের কারিগরি টিমের একজন করে সদস্য থাকবে। যদি ইভিএম-এ কোনো সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তা তৎক্ষণিকভাবে সমাধান করবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ভোটগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন ৫ হাজার ৭৬০ জন কর্মকর্তা। ভোট কেন্দ্র ও ভোট কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। যা নির্বাচনের দিন আঞ্চলিক রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশন থেকে মনিটরিং করা হবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে।