/ গোপালগঞ্জের হামলার পর সেনা প্রহরায় খুলনায় এনসিপি নেতারা

গোপালগঞ্জের হামলার পর সেনা প্রহরায় খুলনায় এনসিপি নেতারা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে ভয়াবহ হামলার পর দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় খুলনায় পৌঁছেছেন।


সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা খুলনায় পৌঁছান। বর্তমানে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ খুলনা সার্কিট হাউজে, কেউবা শহরের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও খুলনা জেলা শাখার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি। তিনি জানান, গোপালগঞ্জের ঘটনার বিষয়ে কোনো প্রেস কনফারেন্স হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।


এর আগে বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেনা নিরাপত্তায় গোপালগঞ্জ জেলার মোল্লাহাট ব্রিজ অতিক্রম করেন। এর কিছুক্ষণ পর শত শত নেতাকর্মী খুলনার শিববাড়ি মোড় থেকে মোল্লাহাটের দিকে রওনা দিয়ে তাদের খুলনায় নিয়ে আসেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ভেড়ারবাজার এলাকায় এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি চলাকালে সংঘটিত হয় এই হামলা। প্রত্যক্ষদর্শী ও দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায়।


হামলার সময় পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে এনসিপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা কয়েক ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন—ইমন তালুকদার (১৮), পিতা: আজাদ তালুকদার, ভেড়ারবাজার, গোপালগঞ্জ সদর, রমজান কাজী (২২), পিতা: কামরুল কাজী, থানার পাড়া ও দীপ্ত সাহা (২৫), পিতা: সন্তোষ সাহা, উদয়ন রোড, গোপালগঞ্জ শহর


নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সূত্র। এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

গোপালগঞ্জের ঘটনার প্রেক্ষিতে খুলনায় প্রশাসনিক সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। এনসিপি নেতারা যাতে নিরাপদে অবস্থান করতে পারেন, সেজন্য সার্কিট হাউজ ও হোটেল এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই এ ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
তবে এনসিপির পক্ষ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি বা আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে এখনো কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।