খুলনায় আলোচনা সভায় মাওলানা ইসমাইল
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন বলেছেন, যারা ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা ও পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছিল তারাই পুজা মন্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছিল। এটা এখন স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্যই ওই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। তিনি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
তিনি গতকাল খুলনা প্রেসক্লাবে ‘‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আলেম ওলামাদের করণীয় কি’’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। তিনি বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার বিষয়টি নিছক একটি সন্ত্রাসী ঘটনা ছিল না। এটা ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো এতবড় অপরাধ যারা করেছিল তাদের চিহ্নিত করা, গ্রেপ্তার করা এবং আইনের হাতে সোপর্দ করার জরুরি কর্তব্যটি তৎকালীন সরকার সম্পাদনে কেবল চরমভাবে ব্যর্থতারই পরিচয় দেয়নি, বরং ঘটনা প্রবাহ অন্যখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টাই চালিয়েছে।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল। বাংলাদেশের জন্য এক অন্ধকার সময় দাবি করে ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে ভোট কারচুপি করে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে। নির্বাচনের আগেই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের মদদে প্রায় তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করে।
হাজার হাজার সংখ্যালঘু মানুষ বাস্তুভিটা থেকে আশ্রয়হীন অবস্থায় পাড়ি জমায় পার্শ্ববর্তী গ্রামে, শহরের মহল্লায়। তারপরও জীবন রক্ষা হয়নি। অনেকে পাঁচ বছর ধরে বাস্তুভিটায় ফিরেও আসতে পারেনি।
দেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এবং এর পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এবং সকল উপজাতিদের দেশের মধ্যে সহাবস্থান নিশ্চিত করেছেন তা’ নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ না হলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখা সম্ভব হতো না। সার্বিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে মাওলানা মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে এসব বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী এবং তাদের দোসরদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে হবে। মসজিদ, মন্দির, পূজা মন্ডপ, ঈদগাহ এরূপ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ মাওঃ মুফতি ইলিয়াস হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটি বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি। আরো বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মুফতি মোস্তফা চৌধুরী (প্রেসিডিয়াম সদস্য), আলহাজ্ব মোঃ শাহিন খান (প্রেসিডিয়াম সদস্য), মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুর রহমান, মাওলানা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জাকারিয়া, মাওলানা মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন কাশেমি, মাওলানা মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা মোহাম্মদ রফিকুর রহমান, ক্বারি মোহাম্মদ ইমদাতসহ শীর্ষ স্থানীয় ওলামায়ে কেরামগণ।