মানিক ঘোষ, কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ): দীর্ঘ ২৩ বছরেরও বেশী সময় ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন আজিবর রহমান। গত ১৯ মার্চ ছিল তার শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবস। পিয় শিক্ষককে অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
২০২২ সালের এপ্রিল ৪ তারিখে সরকারি ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন আজিবর রহমান। শুরুতে অন্য দুইটা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলেও পরে যোগদান করেন সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এরপর একে একে কেটে গেছে প্রায় ২৩ বছর। ইংরেজী বিষয়ে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের কাছে খুব জনপ্রিয়তা ছিলেন।
শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার সহকর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত হন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষককে অশ্রুসজল নয়নে বিদায় দেন তারা। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের।এদিকে অফিস সহায়ক মশিয়ার রহমান ১৯৯৬ সালে আগষ্ট মাসে ২৫ তারিখে ভূষণ স্কুলে যোগদান করেন।২০২৫ সালে এপ্রিলের ০১ তারিখে তার শেষ কর্মদিবস হিসেবে ২৯ বছর চাকরি করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলের হল রুমে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বিদায়ী শিক্ষককের উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করা হয়। তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মানসূচক ক্রেস্ট সহ বিভিন্ন উপহার। শিক্ষাগুরুকে পুষ্পমাল্য পরিয়ে ফুল দিয়ে সাজানো ঘোড়ার গাড়ী করে বিদয় দেন শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারী সহ শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে কালীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম বলেন, যেকোনো বিদায় বেদনা ও কষ্টের। আজিবর রহমানের মত শিক্ষক এদেশের সম্পদ, তারাই সোনার মানুষ গড়ার কারিগর। তার অনুপস্থিতিতে এ বিদ্যালয় তার শুন্যতা অনুভব করবে। সবকিছুরই শেষ আছে, না চাইলেও একদিন ঠিকই বিদায় বলতে হয়। আমি তার অবসর জীবনের মঙ্গল কামনা করি। আর এ ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) শাহিন আলম বলেন, আজিবর রহমানকে তার কর্মজীবনে অনেক শিক্ষার্থীকে পড়িয়েছেন, সত্যিকারের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তারা দেশের কল্যাণে অনেক বড় বড় জায়গা থেকে ভূমিকা রাখছেন। তিনি তার শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজের কাজের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আজীবন। আমি তার নতুন যাত্রার শুভকামনা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা বলেন, আজ সত্যিই আমাদের জন্য বেদনার দিন, মন খারাপের দিন।আজিবর স্যারকে আর কোনোদিন ক্লাসে পাব না ভাবতেই খারাপ লাগছে। সহকর্মী হিসেবে তার কাছে অনেক সহয়োগিতা পেয়েছি। তার ন্যায় পরায়নতা, কর্মদক্ষতা, সততা ও সময়ানুবর্তিতা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। শিক্ষার্থীদের তিনি নিজে তৈরি করেছেন যাদের অনেকে দেশসেরা বিদ্যাপীঠে অধ্যয়ন করে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও তিনি যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। তার অবসর জীবনের মঙ্গল কামনা করি।
বিদায়ী শিক্ষক আজিবর রহমান বলেন দীর্ঘদিন ধরে ভূষণ স্কুলে শিক্ষকতা করেছি,চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের ভাল করে দিক নির্দেশনা সহ শিক্ষা দেওয়া ও আমার সহকর্মীদের সাথে মিলে মিশে কাজ করা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্কুলের সহকারী শিক্ষকমন্ডলী, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ।