/ চিত্রার ভাঙনে তেরখাদায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভসহ অসংখ্য স্থাপনা হুমকিতে, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন

চিত্রার ভাঙনে তেরখাদায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভসহ অসংখ্য স্থাপনা হুমকিতে, নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি,তেরখাদা (খুলনা): চিত্রা নদীর ভাঙনে তেরখাদায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, ঐতিহাসিক ডাকবাংলো ও থানা ভবনসহ একাধিক স্থাপনা হুমকিতে পড়েছে।বিষয়টি নিয়ে দৈনিক পূর্বাঞ্চলে ২১ জুলাই “চিত্রা নদীর ভাঙ্গনে হুমকির মুখে তেরখাদার মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ, সরকারি স্থাপনা সহ বহুঘরবাড়ি”শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তৎপর হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বুধবার (২৩ জুলাই) ভাঙনকবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন পাউবো’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা। তারা জানান,ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাসিক সমন্বয় সভায় প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল আফরোজ স্বর্ণা বলেন, “সংবাদ প্রকাশের পরই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত সাড়া দিয়েছে। আশা করছি,স্থায়ী সমাধানের দিকে যেতে পারব।”

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, “চিত্রার ভাঙন দীর্ঘদিনের সমস্যা।এখন প্রশাসন তৎপর হওয়ায় আশাবাদ দেখা যাচ্ছে। তবে শুধু কথায় নয়, কাজে দেখতে চাই।”

ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার বাপ্পি মোল্লা জানান, “ভাঙনের শব্দে প্রতিদিন আতঙ্কে থাকতে হয়। প্রশাসন এলেও স্থায়ী কিছু না হলে শান্তি আসবে না।”

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবারই আশ্বাস পাওয়া যায়,কাজ হয় না। স্মৃতিস্তম্ভ যদি নদীগর্ভে হারিয়ে যায়, তবে তেরখাদার ইতিহাস মুছে যাবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু অস্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। চিত্রা নদীর গতি ও ভাঙন ঠেকাতে আধুনিক নদী ব্যবস্থাপনা, জিও ব্যাগ স্থাপন ও টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি।চিত্রা নদীর ভাঙন এখন তেরখাদাবাসীর কাছে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা এখন প্রকল্প বাস্তবায়নের বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে চান।