বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তীকালীন রূপে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।” তিনি জানান, মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা দলটির জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেন, “জামায়াত একটি নির্বাচনমুখী দল। তাই গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকেই আমাদের সংগঠিত ও প্রস্তুত হতে হবে।”
রবিবার সকালে হজ পালন শেষে দেশে ফিরে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার এলাকায় স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভায় সভাপতিত্ব করেন ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাস্টার মফিজুল ইসলাম। এরপর ফুলতলা বাসস্ট্যান্ডে ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে এবং শিরোমনি শহীদ মিনারে খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমীর ডা. সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাগুলোতে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি মো. আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাস্টার শেখ সিরাজুল ইসলাম, যুব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, ছাত্রশিবির সভাপতি মো. ইউসুফ ফকির, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ সভাপতি মো. আল আমিন গোলদার, সহ আরও অনেকে।
অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, “গত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন আমরা দেখেছি। কোথাও জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ হয়নি। বর্তমান সমাজে হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অত্যাচার বেড়েছে। তাই আজ দেশের মানুষ বলতে শুরু করেছে—সব দল এসেছে, এখন প্রয়োজন ইসলামী শাসনের।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আমীর ডা. শফিকুর রহমান ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এমন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়া হবে যেখানে বৈষম্য থাকবে না, বেকারত্ব দূর হবে, দুর্নীতি ও লুটপাট থাকবে না।”
আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দিয়ে ইসলামপ্রিয় ও সৎ প্রার্থীদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি আল্লাহভীরু ১৫১ জন এমপি পাঠাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ হবে সত্যিকারের সোনার দেশ। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বা অন্তত বেকার ভাতা প্রদান করা হবে।”
২৪’র গণঅভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এই শহীদদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেন আবার ফ্যাসিবাদের শিকার না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।”
সাবেক এমপি হিসেবে ২০০১-২০০৬ মেয়াদের উন্নয়ন তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমি ফুলতলা-ডুমুরিয়ায় সন্ত্রাস নির্মূল ও সুষম উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ করেছি। বিলডাকাতিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করেছি। দল আমাকে আবার প্রার্থী করেছে। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হলে আগের মতোই সততার সঙ্গে উন্নয়ন কাজ করব।”
সিকিরহাট খেয়াঘাটে পৌঁছালে অধ্যাপক আব্দুল আলীম মোল্যা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।