/ তেরখাদায় ১১টি কমিউনিটি ক্লিনিক জরাজীর্ণ

তেরখাদায় ১১টি কমিউনিটি ক্লিনিক জরাজীর্ণ

রাসেল আহমেদ, তেরখাদা(খুলনা): তেরখাদা উপজেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ কার্যত স্বাস্থ্য সেবা বঞ্চিত। উপজেলার ১৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ১১টির ভবন ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে সরকারি ওষুধ সরবরাহ। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পানতিতা, বারাসাত ও রামমাঝি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে ফাটল, ছাদের প্লাস্টার খসে পড়া, কোথাও রড বেরিয়ে থাকা, ভাঙা দরজা-জানালা, আর অব্যবহৃত শৌচাগারের করুণ চিত্র স্পষ্ট। অনেক ক্লিনিকে নেই বিদ্যুৎ সংযোগও। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

বারাসাত কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা ময়না বেগম বলেন, “কয়েকদিন ধরে আমার মেয়ে জ্বরে ভুগছে।একটু ওষুধের আশায় এসেছিলাম, কিন্তু তারা বলল কিছুই নেই। আমরা গরিব মানুষ, এ ক্লিনিকে না পেলে যাব কোথায়?
পানতিতা কমিউনিটি ক্লিনিকে আসা মার্জিয়া সুলতানা জানান, “উপজেলা কমপ্লেক্স অনেক দূরে। বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনে এসেছি। কিন্তু এখানে চিকিৎসা নেওয়ার মতো পরিবেশই নেই।

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ২২ প্রকার ওষুধের তীব্র সংকট রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আয়রন, জিংক, ব্যথানাশক, সর্দি-কাশির সিরাপ, গ্যাস্ট্রিক ও প্রেসারের ওষুধ। একাধিক সিএইচসিপি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রোগীরা এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, গালমন্দ করেন। অথচ আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা নিজেরাও অসহায়।”

বারাসাত কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি জলি,পানতিতা ক্লিনিকের নেয়ামত হোসেন ও রামমাঝি ক্লিনিকের সিএইচসিপি এমডি বাহারুল ইসলাম জানান, “ভবনের যে অবস্থা, তাতে প্রতিদিন আতঙ্ক নিয়ে কাজ করতে হয়। কখন মাথার উপর থেকে ছাদ খসে পড়ে, বলা যায় না। শৌচাগার ব্যবহার করতে পারি না, বিদ্যুৎ না থাকায় কাজ করাও কঠিন হয়ে পড়ে।”

তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুন্নবী তুহিন বলেন, “কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর অনেক ভবনই বহু পুরনো। কিছু ভবনে বসার সুযোগও নেই। আমরা ভবন সংস্কার বা নতুন নির্মাণের জন্য তালিকা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”
ওষুধ সরবরাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত এক বছর ধরে সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি, আগামী মাস থেকেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।