/ তেরখাদার ছাগলাদহ ও সাচিয়াদাহে ভূমি অফিস চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে এলাকাবাসী

তেরখাদার ছাগলাদহ ও সাচিয়াদাহে ভূমি অফিস চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ভবন আছে, কার্যক্রম নেই

রাসেল আহমেদ,তেরখাদা(খুলনা): তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদহ ও সাচিয়াদাহ ইউনিয়নে ভূমি অফিসের ভবন নির্মিত হলেও তিন বছরেও শুরু হয়নি কোনো সরকারি কার্যক্রম। জনবল নিয়োগ না হওয়ায় ভবন দুটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে এই দুই ইউনিয়নের মানুষকে ভূমি সংক্রান্ত জরুরি সেবা নিতে উপজেলা সদর পর্যন্ত ছুটতে হচ্ছে, যা সময় ও অর্থ ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি ভোগান্তিরও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানায়ায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ছাগলাদহ ও সাচিয়াদাহ ইউনিয়নে দুটি ভূমি অফিস ভবন নির্মাণ করে মেসার্স নিঝুম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এক প্যাকেজে নির্মিত ভবন দুটির নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। যথাসময়ে নির্মাণকাজ শেষ করে ভবন দুটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হলেও আজও সেখানে কোনো দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। সাচিয়াদাহ ইউনিয়নের ভবনটি নির্মাণের পর থেকেই তালাবদ্ধ রয়েছে। ছাগলাদহ ইউনিয়নে ভবন নির্মিত হলেও এখনও ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে পাশের বারাসাত ইউনিয়নের ভবন থেকে। এতে ইউনিয়ন পর্যায়ে সেবা না মেলায় ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ মানুষের। ছাগলাদহ ইউনিয়নের রঞ্জু মোল্লা নিয়মিত জমি সংক্রান্ত কাজে উপজেলা সদরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে সময় অপচয়ের পাশাপাশি বাড়তি খরচও হচ্ছে। একই ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমের ক্ষেত্রেও চিত্র ভিন্ন নয়। তিনি প্রতিবার সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে স্থানীয় সূত্রে।

সাচিয়াদাহ ইউনিয়নের যুবক রাব্বি শেখ ভূমি অফিসের সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, সরকার ভবন বানালেও কাজ শুরু না হওয়ায় সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে না।

স্থানীয় কৃষক কবির মোল্লার মতে, জমির কাগজপত্র সংশোধনের মতো ছোট কাজের জন্য উপজেলা অফিসে যেতে গিয়ে দিনমজুররা চরম কষ্টে পড়ছেন।

সাচিয়াদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বুলবুল আহমেদ জানিয়েছেন, ভবন নির্মাণ শেষ হওয়ার পরও কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। জনবল না থাকায় জনগণের সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না।

তেরখাদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আখি শেখ জানিয়েছেন, ছাগলাদহ ও সাচিয়াদাহ ইউনিয়নে ভূমি অফিস চালুর জন্য ভবন প্রস্তুত থাকলেও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে, এবং দ্রুত কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এদিকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভবন দুটি যথাযথভাবে নির্মাণ সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সেবা কার্যক্রম না থাকায় ভবনগুলো বর্তমানে অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে, সরকারের ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমি সেবা পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্য, তা কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় বাস্তবায়ন হচ্ছে না। জনগণের দাবি, দ্রুত জনবল নিয়োগ ও প্রশাসনিক উদ্যোগের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমি অফিস চালু করে ভোগান্তি লাঘব করা হোক।