একান্ত সাক্ষাৎকারে
বিএম মোজাম্মেল হক

সাঈয়েদুজ্জামান স¤্রাট : কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও সিটি নির্বাচনের পর এবার দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। এর অংশ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু কর্মসূচি। দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে, অনুপ্রবেশকারী, সুবিধাবাদী ও হাইব্রিডখ্যাতদের ব্যাপারে রাখা হচ্ছে বিশেষ সতর্কতা। একই সাথে আগামী সকল নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের পর্যবেক্ষণ এবং স্থানীয় দলীয় সাংসদদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্যাগী, জনপ্রিয় ব্যক্তিদেরকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার প্রবণতা কমার পাশাপাশি আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হবে। একইসাথে বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকছে।
তিনি জানান, চট্টগ্রাাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ও পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের বিভাগীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন তারা। গত ২০১৯ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লীগসহ এর ছয়টি সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীরা ছিলেন ভীষণ ব্যস্ত। এই নির্বাচনের ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর আবারও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পুরোদমে কাজ শুরু করেছে দলটি। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে নির্বাচনের পর খুলনা বিভাগের দশটি জেলা ও খুলনা মহানগরীসহ মোট এগারটি সাংগঠনিক জেলা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভাতে যেসব সহযোগী সংগঠন এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সেগুলোর কমিটি দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান দলের খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য, বিএম মোজাম্মেল হক। এ বিষয়ে এখন কাজ চলছে সংশ্লিষ্ট অঙ্গ-সংগঠনগুলোর। পাশাপাশি যে সব জেলাগুলোর পুর্ণাঙ্গ কমিটি প্রদান করা হয়নি সেগুলোকে দ্রুত শেষ করা, সাংগঠনিক সফর, সদস্য সংগ্রহ অভিযান, প্রতি জেলার কমপক্ষে দু’জন প্রবীণ নেতাকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সংবর্ধনা দেওয়া, জেলা-উপজেলায় বর্ধিত, প্রতিনিধি ও কর্মিসভা সম্পন্ন করার কাজ চলছে। ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায় থেকে উপজেলা-জেলা-মহানগরের কমিটি হালনাগাদ করারও কাজ হাতে নিয়েছে দলটি।
তিনি আরও জানান, আগামীতে ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায় থেকে সম্মেলনও শুরু হবে। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে জেলা-মহানগর পর্যন্ত সম্মেলন শেষ করে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করা হবে।
বিএম মোজাম্মেল হক পূর্বাঞ্চলকে দেয়া সাক্ষাতকারে আরও বলেন, সবক্ষেত্রে একক প্রার্থী হলে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে মানুষ অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ইতোমধ্যে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় সাংগটঠনিক সফর ও বিশেষ সভা শেষ করেছেন। তিনি গত প্রায় একসপ্তাহব্যাপী খুলনা বিভাগের দশ জেলার বিভিন্ন পৌরসভা এলাকাতে আসন্ন পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নড়াইল,যশোর,সাতক্ষিরাঝিনাইদহ, মাগুরা ও কুষ্টিয়াতে বর্ধিত সভা করেছেন। এসময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এমএমজিদ,খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক অজয় সরকার,সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আজম লেলিন। বিএম মোজাম্মেল হক তার সফরসঙ্গীদেরকে তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।সূত্র জানায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রতি জেলা থেকে দু’জন করে প্রবীণ নেতাকে সংবর্ধনা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তা মার্চের মধ্যেই শেষ করা হবে। ছয় মাসের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ ও সংবর্ধনা পাওয়া ব্যক্তিদের নাম চূড়ান্ত করা হবে। সার্বিক বিষয়ে আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগের এই দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনকল্যাণ। আর তার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করা। আর নির্বাচনে জিততে দরকার শক্তিশালী সংগঠন, নিবেদিত নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থনে ক্ষমতায় যেতে বিশ্বাসী। সেজন্যেই সংগঠনকে শক্তিশালী করার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে এবং ঐক্যবদ্ধ রাখতে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।