# বিভাগে ২৮ মারা গেলেন ২৮ জন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ দীর্ঘদিন পর এই প্রথম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘন্টায় কোন রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে নগরীর অন্য দু’টি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। একজন শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ও একজন গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া খুলনা জেনারেল হাসপাতাল ও সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিগত ২৪ ঘন্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। সব মিলিয়ে খুলনার করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর জানিয়েছে। এসময় শনাক্ত হয়েছে ৬১২ জনের।
খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, হাসপাতালে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে গতকাল সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১২৮ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ৫৬ জন, ইয়োলো জোনে ৪০ জন, আইসিইউতে ২০ জন এবং এইচডিইউতে ১২ জন ভর্তি ছিলেন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নগরীর ফুলবাড়ি গেটের নাহিদ সুলতানা (৪২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। গতকাল সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন ৩৫ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ছিলেন ১০ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন ৩০ জন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল সকাল পর্যন্ত ৬৯ জন ভর্তি ছিলেন বলে হাসপাতালের ম্যানেজার এডমিন এন্ড এইচআর মো: হামিদুল ইসলাম খান জানান। সকাল পর্যন্ত আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০ জন এবং এইচডিইউতে দু’জন।
গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বাগেরহাটের চিতলমারীর নুরজাহান (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। গতকাল সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৪৮ জন। আইসিইউতে ছিলেন চারজন এবং এইচডিইউতে পাঁচজন।
বিভাগে মৃত্যু ২৮ ঃ অপরদিকে, খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ৬১২ জন। এ নিয়ে বিভাগে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৪৯৪জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২ জনের মৃত্যু হয় কুষ্টিয়ায়। বাকিদের মধ্যে যশোরে সাতজন, খুলনা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গায় দু’জন করে, বাগেরহাট, মাগুরা ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয় ৯৯ হাজার ৪৯৪ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৬৫৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৭৮ হাজার ৩৫৯ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলা ভিত্তিক করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, খুলনা জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩০ জনের। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৪ হাজার ৯১০ জনের। মারা গেছেন ৬৭৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ২০ হাজার ১৪ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৩৯৫ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৫৭৮ জন।
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৬৫ জনের এবং মারা গেছেন ৮৫ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৮৮৬ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৫১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৭৩৩ জন। মোট মারা গেছেন ৩৯৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ৭৯৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৬ জনের। মোট মারা গেছেন ৯৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ জন।
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৯ জনের শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৭ জনের। মোট মারা গেছেন ৭৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২০৯ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ১৫৫ জনের। মোট মারা গেছেন ২২৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১১৪ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫ হাজার ৮০৭ জনের। মোট মারা গেছেন ৬৩০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ২৯৬ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৮ জনের শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৩১৪ জনের। মোট মারা গেছেন ১৭৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৫১৭ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৩৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২২২ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪৭১ জন।